নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করছে দেশের শান্তি: কাদের সিদ্দিকী

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী স্পষ্টভাবে বলেছেন, সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনায় যাবেন না তিনি।
বিজ্ঞাপন
নির্বাচন কমিশনকে তার সাংবিধানিক অবস্থান মনে করিয়ে দিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রধান বলেন, তফসিল ঘোষণার পর ইসি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান, যা সরকারেরও ওপরে অবস্থান করে। নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার গুরুদায়িত্ব রয়েছে।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইসির সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন বঙ্গবীর।
বিজ্ঞাপন
গত ১৫ মাস ধরে বর্তমান সরকারের ডাকে আলোচনায় না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। তখন সরকারের দায়িত্ব শুধু ইসির সিদ্ধান্ত পালন করা। এছাড়া গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে করার সিদ্ধান্তটি একটি বড় অসংগতি। ৭০-৮০% ভোটার গণভোটে অংশ না নিলে নির্বাচনই হুমকির মুখে পড়বে। অতীতে নির্বাচন কমিশন সরকারের ইচ্ছা পূরণ করেছে, যা অত্যন্ত খারাপ ছিল। বর্তমান ইসির কাছে এখন সুযোগ এসেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ক্ষমতা হারানো, শেখ হাসিনার পতন বিএনপি-জামায়াত বা নতুন কোনো শক্তির কারণে হয়নি, বরং এটি ছিল আল্লাহর গজব, যা তিনি অসন্তুষ্টি তৈরি করার ফলে এসেছে।
বিজ্ঞাপন
ক্ষমা না চাওয়ায় জামায়াতকে সম্মান নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমি খেলাফত আন্দোলনসহ সব ইসলামপন্থি দলকে সম্মান করি। তবে জামায়াতে ইসলামীকে করতাম যদি তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধাচরণের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইত। আমাকে হত্যা করা গেলেও মিথ্যা বলানো যাবে না।
কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা যদি জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে পারেন, তাহলেই দেশে শান্তি ফিরবে। শান্তি ফিরলে বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ডের চেয়েও শান্ত দেশ হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার গেলে গুন্ডার কোনো জায়গা থাকে না। গত নির্বাচনে ২১টি কেন্দ্রের সিল করা ফলাফলে অসংগতি দেখেছি, যেখানে ৪টা ১৩ মিনিটে ১৭০৮ ভোট থাকলেও পরে তা ২৬০০ হয়ে যায়।
কাদের সিদ্দিকী বর্তমান সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান সরকার দেশটাকে একদম বিভক্ত করে ফেলেছে। শেখ হাসিনার পতন হলেও স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিলুপ্ত হবে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শেখ হাসিনাকেই বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞাপন
এনসিপির বিষয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, এরশাদ হটাও আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমান— সবকিছুকে তারা অস্বীকার করেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিজের রাজনৈতিক পিতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে দেশকে ভালোবাসতে শিখেছি। আপনারা ভালো ভোট করতে পারলে জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
তিনি নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করে বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারকে বাইরে রেখে ভোট করলে ভালো নির্বাচন করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ ইলেকশন বন্ধ করার চেষ্টা করবে।








