হাসিনার রায়ের অপেক্ষায় জাতি: মির্জা ফখরুল

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় ঘোষণা হচ্ছে সোমবার (১৭ নভেম্বর)। পুরো জাতি এই রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিজ্ঞাপন
নিজের ফেসবুক পোস্টে মির্জা ফখরুল লিখেছেন, ‘ঢাকায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষিত হবে। আমি আশা করি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। জাতি অপেক্ষায় আছে!’ এই পোস্টে তিনি জাতীয় ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা প্রকাশ করেছেন।
মামলার রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমের মাধ্যমে লাইভ দেখানো হবে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও এই রায়ের কার্যক্রম সম্প্রচার করবে। এছাড়া, ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষও এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে পারে।
আরও পড়ুন: হঠাৎ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি
বিজ্ঞাপন
আজ সকাল থেকেই বিটিভির বিশেষ লাইভ সম্প্রচার টিম ট্রাইব্যুনালে অবস্থান নিয়েছে। সকাল ৮টার পর টিমটি আদালতের মূল ফটকে পৌঁছে লাইভ কভারেজ শুরু করে। আদালতের বাইরে ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা জড়ো হয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণা করবেন।
প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বিজ্ঞাপন
এই মামলায় মূল আসামিরা হলেন শেখ হাসিনা (পলাতক), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (পলাতক) এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (গ্রেফতার, রাজসাক্ষী)।
অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে গণভবনে উসকানিমূলক বক্তব্য, হেলিকপ্টার-ড্রোন থেকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, রংপুরে আবু সাঈদের হত্যা, চানখাঁরপুল ও আশুলিয়ায় গণহত্যাসহ পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধ।
বিজ্ঞাপন
রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল, সুপ্রিম কোর্ট এলাকা এবং রাজধানীর অন্যান্য স্থানে বহুস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এছাড়া, বরিশালসহ অন্যান্য এলাকায়ও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এই রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ এটি প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ফলাফল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ১,৪০০ জনের প্রাণহানি এবং ২৫ হাজারের বেশি আহতের ঘটনায় এই মামলা দায়ের হয়েছে।








