এলডিসি উত্তরণ ও চট্টগ্রাম বন্দর ঘিরে যা বললেন তারেক রহমান

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্বল্পন্নোত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সাম্প্রতিক দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত নিজের পোস্টে উল্লেখ করেছেন, গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেট ছাড়া সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছে, যা দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
তারেক রহমান উদাহরণ দিয়ে বলেন, গাজীপুরের একটি ছোট গার্মেন্টস মালিকের কাহিনী চিন্তা করুন। এক যুগের বেশি সময় ধরে তিনি কারখানা গড়ে তুলেছেন, শ্রমিকদের বেতন দিয়েছেন, বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করছেন। হঠাৎ কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া শুল্ক-সুবিধা বাতিল হলে তার ব্যবসায়িক চাপ বেড়ে যায়, অর্ডার কমে আসে এবং পরিবারের নিরাপত্তা সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে।
বিজ্ঞাপন
অনুরূপভাবে, নারায়ণগঞ্জের এক তরুণী তার পরিবারের অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবনযাপন করছেন। রফতানির চাপ বাড়লে ওভারটাইম বন্ধ, শিফট কমে এবং শেষ পর্যন্ত ছাঁটাইয়ের শঙ্কা তৈরি হয়।
তারেক রহমান বলেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে জনগণকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি। প্রকৃত তথ্য জনগণের কাছে প্রকাশ করা হয়নি। তাই এলডিসি উত্তরণের প্রক্রিয়া সরকারি বিবৃতির চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি উল্লেখ করেছেন, বিএনপি আগেই বলেছে, ২০২৬ সালে উত্তীর্ণ হওয়ার সময় স্থগিতের বিকল্প খোলা না রাখার মতো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা নির্বাচনী ম্যান্ডেট ছাড়া করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তারেক রহমান প্রশ্ন তোলেন, কেন সরকার ভান করছে যে কোনো বিকল্প নেই? কেন নিজেরাই দেশের ভবিষ্যৎ সীমিত করছে? স্থগিতের বিকল্প বন্ধ করে আন্তর্জাতিক আলোচনায় প্রভাব খাটানোর সুযোগ হাতছাড়া করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারের নিজস্ব নথিতেই স্বীকার করা হয়েছে, ব্যবসায়ীরা ব্যাংক খাতে চাপ, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, ঋণের ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং রফতানি মন্থর হওয়ার প্রভাব অনুভব করছেন। এলডিসি উত্তরণে এটি কোনো বিরোধিতা নয়। দেশের এগিয়ে যাওয়ার অধিকার আছে, কিন্তু প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: এনসিপির নেতৃত্বে আসছে নতুন রাজনৈতিক জোট
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রাম বন্দরকেও তিনি এলডিসি উত্তরণের মতো একটি কৌশলগত প্রবেশপথ হিসেবে দেখিয়েছেন। বন্দরের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া নেওয়া হয়েছে, যুক্তিসঙ্গত উদ্বেগকে ‘অনিবার্যতার’ আড়ালে উপেক্ষা করা হয়েছে।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এটি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, এটি দেশের ভবিষ্যৎ এবং নীতিমালা রক্ষার প্রশ্ন।
তারেক রহমান পোস্টের শেষে উল্লেখ করেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন হবে বাংলাদেশের মানুষের মত প্রকাশ এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। এটি নিশ্চিত করবে যে দেশের নীতিনির্ধারণে জনগণের কথা সর্বপ্রথম বিবেচনা করা হচ্ছে এবং ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতি বাস্তবায়িত হচ্ছে।








