‘পুরোনো বউকে নতুন শাড়িতে ঘোমটা দিয়ে আর ধোঁকা দেওয়া যাবে না’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশের ইতিহাসে গত ৫৩ বছরে যারা দেশ পরিচালনা করেছে, তাদের নীতি ও কর্মকাণ্ড দেশের মানুষের জন্য ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, এই ৫৩ বছরের ইতিহাসে একবার নয়, পাঁচবার চোরের দিক থেকে ফার্স্ট হয়েছে। আমাদের পেয়েছে হাজার হাজার মাতৃকোল শিশুহারা, মা চিৎকার করে কাঁদছে—আমার সন্তান আমাকে মা বলে ডাক দিচ্ছে না। সেই চিৎকার এখনো আমাদের কানে ভাসছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বরিশালের চরমোনাই দরবারে মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে উলামা-মাশায়েখ ও দ্বীনদার বুদ্ধিজীবী সমাবেশে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
বিজ্ঞাপন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ ও আহতদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে চরমোনাই পীর বলেন, আবু সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে এই দেশের জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। সেই হাফেজ, সেই আলেম যারা দেশ ও ইসলামকে ভালোবাসে, তাদের জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করেছে। শত শত উদীয়মান মেধাবী চক্ষু হারিয়েছে, আর কোনোদিন আলো দেখবে না। সেই দৃশ্য এখনো আমাদের সামনে ভাসছে।
তিনি আরও বলেন, ৫৪ বছর পর একটি সুযোগ এসেছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের নিয়ে কলঙ্কজনক ইতিহাস রচনা করবে। তাই আজ আমরা দিনরাত সর্বত্র ঘুরছি। কেউ যদি ভাবেন আমরা ব্যক্তিগত স্বার্থ বা দলের জন্য এগোচ্ছি—না, আল্লাহর কসম, তা নয়।

চরমোনাই পীরের ভাষ্য, বিগত দিনে যারা দেশ পরিচালনা করেছে, তারা নতুনভাবে আবার ক্ষমতা দখল করতে চায়। গ্রামে একটি কথার আছে—‘অর্ধপাগল এখন ফুল পাগলে, আরেক ডিগ্রি দিলে আরও বড় পাগল’। তারা সেই চরিত্র বাস্তবায়ন করবে। পুরোনো বউকে নতুন শাড়িতে ঘোমটা দিয়ে আর ধোঁকা দেওয়া যাবে না। এই ধোঁকা আর বাংলাদেশে চলবে না। আমরা ৫৩ বছর ধোঁকা খেয়েছি, আর এবার নয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি সতর্ক করেন, যদি আবার এই ফ্যাসিস্টরা ক্ষমতায় আসে, আমাদের যারা জীবন দিয়েছে, পঙ্গু হয়েছে, চক্ষু হারিয়েছে, তাদের ত্যাগ বিফলে যাবে। পেছনের রাস্তা দিয়ে তারা ঢুকে দেশের ওপর বিদেশি আধিপত্যবাদ চাপাবে।
আরও পড়ুন: আবারও সিসিইউতে নেওয়া হলো খালেদা জিয়াকে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি রেজাউল করীম বলেন, আমাদের দেশের বড় নেতা বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘হাসিনা পালায় না’। আল্লাহর কসম, এক জালেম ফ্যাসিস্টকে তাড়িয়ে আমাদের ওপর আবার ফ্যাসিস্ট চাপিয়ে দেওয়া হবে—এটি মনেই গ্রহণ করা যায় না।
বিজ্ঞাপন
পীর আরও বলেন, আমি নির্বাচনে প্রার্থী নই এবং হবও না। মন্ত্রী হওয়ার কোনো প্রশ্ন নেই। আমাদের প্রচেষ্টার লক্ষ্য দেশকে ভালো অবস্থায় নেওয়া—কারণ আমরা দেশ, ইসলাম ও মানুষকে ভালোবাসি।
সমাবেশে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতেয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম, কেএম আতিকুর রহমানসহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।








