Logo

কবরে মৃতদেহ অক্ষত থাকা কি জান্নাতি হওয়ার আলামত

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১৭:৩৮
17Shares
কবরে মৃতদেহ অক্ষত থাকা কি জান্নাতি হওয়ার আলামত
ছবি: সংগৃহীত

প্রতিটি প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। প্রত্যেককেই এই দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে যেতে হবে। মানুষ মারা গেলে সাধারণত তাদের দেহকে মাটিতে দাফন করা হয়। দাফনের পর সেই ব্যক্তির সঙ্গে মহান আল্লাহ তার সঙ্গে কেমন আচরণ করছেন, তার কবরের জীবন কেমন যাচ্ছে, তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউই জানেন না।

তবে কখনো কখনো অনেকদিন পর কারো মাটির নিচে কারো মৃতদেহ অক্ষত পাওয়া গেলে তা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। হাদিস শরীফে আছে, আল্লাহর কিছু বিশেষ বান্দাদের মৃতদেহ তিনি মাটির জন্য হারাম করেছেন। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহ মাটির জন্য নবী-রাসুলগণের দেহকে হারাম করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭) অর্থাৎ নবীদের দেহ কবরেও অক্ষত থাকে, মাটিতে নষ্ট হয় না। কিন্তু মহানবী (সা.) এটা স্পষ্ট করেননি যে, মাটির নিচে কারো মৃতদেহ অক্ষত পাওয়া গেলেই তিনি আল্লাহর বিশেষ বান্দা কিনা? নবী-রাসুলদের মতো তিনি নিষ্পাপ কিনা?

এখানে একটা কথা জানা দরকার, তা হলো, কারো মরদেহ কবরে পচে যাওয়া তার পাপী হওয়ার প্রমাণ বহন করে না। কেননা, কবরে লাশ মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি মাটি থেকে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, তাতেই তোমাদের ফিরিয়ে দেব এবং তা থেকে পুনর্বার তোমাদের বের করব।’ (সুরা : তাহা, আয়াত : ৫৫)

তবে বিভিন্ন সময় কিছু সাহাবায়ে কেরামের কবর কিংবা নেককার মনীষীদের মৃতদেহ বহুদিন পর কবরে অক্ষত পাওয়া যাওয়ার নজির রয়েছে এই পৃথিবীতে। আবার এমন অনেক মৃতদেহ আজ অব্দি পৃথিবীতে অক্ষত পাওয়া যায়, যেগুলো বিশেষ ভাবে সংরক্ষন বা প্রাকৃতিক কারণে অক্ষত পাওয়া যায়। অনেক সময় আবার দাফন প্রক্রিয়ার কারণেও মৃতদেহ মাটিতে মিশতে দীর্ঘদিন সময় নিতে পারে।

টেক্সাস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেনসিক অ্যানথ্রোপোলজি সেন্টারের পরিচালক ড্যানিয়েল ওয়েসকট বলেন, সাধারণত মৃত্যুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই পচনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও, এর সময়কাল নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ে, যেমন পরিবেশের তাপমাত্রা, মাটির অম্লতা এবং কফিনের উপাদান। সাধারণত, একটি সাধারণ কফিনে দাফন করা দেহ প্রায় এক বছরের মধ্যে পচন শুরু করে, কিন্তু পুরোপুরি কঙ্কাল হিসেবে পরিণত হতে প্রায় এক দশক সময় লাগে। (সূত্র : লাইভ সাইন্স ডটকম, https://shorturl.at/rtrOV)

আবার মহান আল্লাহ কোনো কোনো বেঈমানের মৃতদেহকেও পৃথিবীবাসীর জন্য নিদর্শন স্বরূপ অক্ষত রেখে দেন। যেমন, ফেরাউনের মৃতদেহের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, সুতরাং আজ আমি তোমার (কেবল) দেহটি বাঁচাব, যাতে তুমি তোমার পরবর্তী কালের মানুষের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। (কেননা) আমার নিদর্শন সম্পর্কে বহু লোক গাফেল হয়ে আছে। (সুরা ইউনুস, আয়াত : ৯২)

প্রকৃত পক্ষে কে জান্নাতি, আর কে জাহান্নামি তা একমাত্র মহান আল্লাহই ভালো জানেন। তাই যারা জীদ্দশায় আমৃত্যু মহান আল্লাহর প্রদত্ত কোরআন-হাদিস মোতাবেক জীবন পরিচালিত করেছেন, তাদের মৃতদেহ অক্ষত পাওয়া গেলে তাদের ব্যাপারে নাজাতের আশা করা দোষণীয় না হলেও কবরে কারো মৃতদেহ পচে গেলে বা অক্ষত থাকলেই তাকে নিশ্চিত করে জান্নাতি বা জাহান্নামি বানানোর বিতর্কে না জড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। বরং মুমিনের কাজ হবে, মহানবী (সা.) যতটুকু স্পষ্ট করেছেন, ঠিক ততটুকু মেনে নিয়ে তার নির্দেশনা মোতাবেক আমল করা এবং জীবন নির্বাহ করা।

জেবি/এমএল
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD