সোনার দাঁত লাগানো কী ইসলামে বৈধ যা বললেন আল-আজহার হাউস অব ফতোয়া

মুসলিম সমাজে সোনার দাঁত বসানো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলে আসছে। কেউ এটিকে বিলাসিতা ও অহংকারের প্রতীক মনে করেন, আবার কেউ চিকিৎসাগত প্রয়োজনে তা বৈধ মনে করেন। এবার এ বিষয়ে মিসরের বিখ্যাত ইসলামিক প্রতিষ্ঠান আল-আজহার হাউস অব ফতোয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ইসলামিক প্রতিষ্ঠান আল-আজহার হাউস অব ফতোয়ায় বলা হয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত দাঁতের চিকিৎসা, সৌন্দর্য রক্ষা বা শারীরিক অস্বস্তি দূর করার প্রয়োজনে সোনা, রুপা বা প্লাটিনাম ব্যবহার করা হয় তাতে ইসলামে কোনো নিষেধ নেই। অর্থাৎ, বিলাসিতা নয় বরং প্রয়োজনের ভিত্তিতে সোনার দাঁত ব্যবহার করলে তা হারাম হবে বলে জানিয়েছেন।
ইসলামী ইতিহাসে দেখা যায়, এক যুদ্ধে সাহাবি আরফাজা ইবনু সাদ আল-কিনানির নাক কেটে গেলে তিনি প্রথমে রুপার নাক ব্যবহার করেন। কিন্তু তা ক্ষয়ে গেলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে সোনার নাক ব্যবহারের অনুমতি দেন। আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইর (রা.) দাঁত হারালে নবী করিম (সা.) তাঁকেও সোনার দাঁত লাগানোর নির্দেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
ইসলামিক ইতিহাসে আরও দেখা যায়, মুসা ইবনু তালহা, আবু রাফি, সাবিত আত-তিব্বানি, ইসমাইল ইবনু ইয়াসিদ ও মুগিরা ইবনু আবদুল্লাহ প্রমুখ বিশিষ্ট সাহাবিদেরও সোনার দাঁত ছিল।
বিখ্যাত তাবেঈ হাসান আল-বাসরি, ইমাম আয-জুহরি, ইমাম আন-নাখাঈসহ হানাফি ফকিহরা বলেছেন, প্রয়োজনে সোনার দাঁত পরা জায়েজ। এছাড়া ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল-এর অনুসারীরাও এ বিষয়ে একই মত দিয়েছিলেন।
তবে তাঁরা সতর্ক করেছেন অতিরিক্ত বিলাসিতা বা অহংকার যেন এতে না থাকে। ইবন কুদামা লিখেছেন, প্রয়োজনের সীমার মধ্যে থাকলে ইসলামে সোনা ও রুপার দাঁত ব্যবহার করা বৈধ।
বিজ্ঞাপন
আল-আজহারের ফতোয়ায় আরও বলা হয়েছে, প্লাটিনামসহ অন্যান্য ধাতু ব্যবহারের ক্ষেত্রেও ইসলামী শরিয়তে স্পষ্ট কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রয়োজন অনুযায়ী এসব ধাতু ব্যবহার করা যেতে পারে।
অতএব, বিলাসিতা নয় বরং চিকিৎসার প্রয়োজন, সৌন্দর্য রক্ষা বা অস্বস্তি দূর করার উদ্দেশ্যে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সোনার দাঁত ব্যবহার করা ইসলামে বৈধতা রয়েছে। এমনকি স্থায়ীভাবে দাঁতে সোনা বা রুপা লাগানো থাকলেও মৃত্যুর পর তা খুলে ফেলার প্রয়োজন নেই।








