কাদিয়ানি মতবাদের বিরুদ্ধে আকিদা রক্ষার ঐতিহাসিক সংগ্রাম: হাসান আল আজহারী

ইসলামের অন্যতম মৌলিক ভিত্তি খতমে নবুয়ত তথা নবুয়তের চূড়ান্ততার সুরক্ষায় যুগ-সচেতনতার বার্তা নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘আ’লা হযরত কনফারেন্স ২০২৫। শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, আ’লা হযরত ইমাম শাহ আহমদ রেযা খাঁন বেরলভী (রহ.)’র ১০৭তম ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ইমাম আযম ও আ’লা হযরত গবেষণা পরিষদ এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপন
এবারের কনফারেন্সে মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল কাদিয়ানি মতবাদের বিরুদ্ধে আ’লা হযরতসহ সুফি-সুন্নি সমাজের ঐতিহাসিক প্রতিরোধ এবং খতমে নবুয়তের আকিদা রক্ষার আন্দোলন।
আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত এর প্রচার সচিব, মাওলানা সৈয়্যদ হাসান আল আজহারী (মা:জি:আ) তার বক্তব্যে আলা হযরত ইমাম শাহ আহমদ রেযা খাঁন বেরলভী (রহ.)’র ভূমিকার উপর আলোকপাত করেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আলা হযরতের নেতৃত্বে সূচনা হয় এক ব্যাপক বৌদ্ধিক, ধর্মীয় ও সামাজিক আন্দোলন, যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল— খতমে নবুয়তের সুরক্ষা ও মুসলিম সমাজকে বিভ্রান্তিমুক্ত রাখা।
তিনি আরোও বলেন,কাদিয়ানি মতবাদের বিরুদ্ধে এই সংগ্রাম শুধু মতাদর্শিক বিতর্ক ছিল না, এটি ছিল আকিদা রক্ষার আন্দোলন, ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ এবং উপমহাদেশের সুন্নি সমাজের সম্মিলিত আত্মরক্ষা।
হাসান আজহারী বলেন, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে নবুয়তের দরজা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। এটি কুরআন, সুন্নাহ ও উম্মাহ্ সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত। খতমে নবুয়ত এমন এক ভিত্তি, যার ওপর পুরো মুসলিম আকিদার স্থাপত্য টিকে আছে।
বিজ্ঞাপন
তবে ঊনবিংশ শতকের শেষভাগে পাঞ্জাবের কাদিয়ান নামক অঞ্চলের মির্জা গোলাম কাদিয়ানি প্রথমে মুজাদ্দিদ, এরপর ইমাম মাহদি, তারপর মসীহ এবং সবশেষে নবি হওয়ার দাবি উত্থাপন করে, যা সরাসরি খতমে নবুয়ত আকিদার মূলে আঘাত হানে। কাদিয়ানির এই দাবি ইসলামের মূলধারার কাছে নবুয়তের সমাপ্তি অস্বীকারের প্রতিবিফলন হিসেবে বিবেচিত হয়।
আলা হযরতের নেতৃত্বে সূচিত প্রতিরোধ
এই প্রেক্ষাপটে উপমহাদেশের শীর্ষ আলেমদের মধ্য থেকে জোরালো দাবি ওঠে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার। সুফি-সুন্নি পরিমণ্ডল এই বিরোধিতার সবচেয়ে স্পষ্ট, প্রামাণ্য ও কার্যকর প্রতিরোধের কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
বিজ্ঞাপন
আ’লা হযরতের কালজয়ী গ্রন্থ হুসামুল হারামাইন’ সহ অসংখ্য ফতোয়া, তর্কমূলক জবাব, বিতর্ক, পুস্তিকা ও লেখনী পুরো মুসলিমবিশ্বে আলোড়ন তোলে। এই আন্দোলন ইতিহাসে সুপরিচিত হয় ‘খতমে নবুয়ত আন্দোলন’নামে।
পরবর্তীকালে পীর মেহের আলি শাহ্, শাহ্ নুরানি, জামিয়াতুর রেজভিয়ার আলেমরা এবং দক্ষিণ এশিয়ার অসংখ্য সুন্নি-সুফি নেতৃত্ব এই বিরোধিতাকে আন্দোলনের রূপ দেন।
বিজ্ঞাপন
এই কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আন্দোলনের তাত্ত্বিক ভিত্তি ও সামাজিক গুরুত্বকে আরও স্পষ্ট করে তোলা হয়।
অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে খতমে নবুয়তের সুরক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে।








