ময়মনসিংহে জিআই স্বীকৃত লাল চিনির সুনাম রক্ষায় কঠোর প্রশাসন

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় ভেজাল লাল চিনি তৈরির গোপন কারখানায় অভিযান চালিয়ে এক ভেজালকারীকে আটক করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ফুলবাড়ীয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আরিফুল ইসলাম।
অভিযানে ১ হাজার ৭৫০ কেজি ভেজাল লাল চিনি, এক ড্রাম লালী/নালী ও একটি কড়াইসহ বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ভেজাল চিনি তৈরির অভিযোগে আব্দুস ছালাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তিনি ফুলবাড়ীয়া উপজেলার পলাশতলী বয়ারমারা গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে। গোপনে চলত লাল চিনি ভেজালের কারখানা।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার খালপাড় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে লাহিড়ী পাড়ার আঃ মজিদ ও আঃ ছালাম মিলে ভেজাল লাল চিনি তৈরির ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। তারা স্থানীয় একটি আধাপাকা বাড়ি ভাড়া নিয়ে সামনে পাটের ব্যবসার আড়ালে গোপনে ভেতরে ভেজাল চিনি উৎপাদন করত।
বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে ভেজাল চিনি তৈরির সরঞ্জামসহ দেড় টন চিনি জব্দ করে এবং ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত আব্দুস ছালামকে গ্রেপ্তার করে।
প্রশাসনের সতর্কবার্তা: খাদ্যে ভেজাল মেশানোর অপরাধে আদালত অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
বিজ্ঞাপন
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আরিফুল ইসলাম বলেন, যারা আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী ও জিআই স্বীকৃত পণ্য লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোর চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, একই এলাকায় কয়েক বছর আগে অভিযান চালিয়ে আঃ মজিদের ভেজাল চিনি তৈরির কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ ভেজাল চিনি ও উৎপাদন সরঞ্জাম জব্দ করেছিল। তারপরও একই এলাকা ফের ভেজালকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হওয়ায় সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসীর দাবি স্থানীয়রা বলেন, লাল চিনি এখন জিআই ঘোষিত জাতীয় গৌরবের পণ্য। এই পণ্যে ভেজাল মেশানো মানে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা। যারা লাল চিনির সুনাম নষ্ট করছে, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ফুলবাড়ীয়া উপজেলাকে ভেজালমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।