মুফতি মুহিব্বুল্লাহের অপহরণ নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস

গাজীপুরের টিএন্ডটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মোহাম্মদ মোহেবুল্লাহ মিয়াজির কথিত ‘অপহরণ’ রহস্যের জট খুলেছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে— এটি অপহরণ নয়, খতিব নিজেই বাসে চড়ে পঞ্চগড়ে গিয়েছিলেন।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টারের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহান এ তথ্য জানান। এ সময় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অভয়নগরে ফেনসিডিলসহ নারী মাদক কারবারী আটক
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ঘটনাটি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করেছি। এজাহারে বর্ণিত অপহরণ ও নির্যাতনের কোনো প্রমাণ মেলেনি। বরং খতিব নিজেই গাবতলী থেকে পঞ্চগড়গামী বাসে যাত্রা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২৪ অক্টোবর টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা (নং–৫৪) দায়ের করা হয় ধারা ৩২৩/৩৪১/২৯৫(এ)/৩৬৪/৩৭৯/৩০৭/৫০৬/৩৪ পেনাল কোডে।
অভিযোগে বলা হয়, ২২ অক্টোবর সকালে মর্নিং ওয়াকে বের হলে অজ্ঞাতনামা ৪–৫ জন ব্যক্তি একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালায় ও পরে পঞ্চগড়ে ফেলে যায়।
কিন্তু তদন্তে ভিন্ন চিত্র উঠে আসে। টিএন্ডটি কলোনি থেকে মাজুখান পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, খতিব একাই হেঁটে যাচ্ছেন। ঐ সময় কোনো অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করেনি।
বিজ্ঞাপন
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দেখা যায়, সকাল ১১টা ৩৬ মিনিটে তিনি ঢাকার সোবহানবাগ এলাকায় ছিলেন এবং দুপুর ২টার দিকে গাবতলী শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার থেকে পঞ্চগড়গামী বাসের টিকিট কেটে ই–১ সিটে যাত্রা করেন
যাত্রাপথে বগুড়ার শেরপুরের ‘পেন্টাগন হোটেলে’ নামাজ শেষে পুনরায় বাসে ওঠেন— যা সিসি ক্যামেরায়ও ধরা পড়ে। রাতে পঞ্চগড়ে নেমে রাস্তার পাশে নামাজ ও প্রস্রাবের সময় পোশাক ভিজে গেলে তিনি তা খুলে ফেলেন এবং ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে স্থানীয়রা তাকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখে ৯৯৯-এ ফোন দিলে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
বিজ্ঞাপন
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ভিকটিমের বক্তব্য ও প্রমাণে বড় ধরনের অসঙ্গতি রয়েছে। কোনো অপহরণের ইঙ্গিত মেলেনি। তিনি মানসিক বা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন কি না, তা যাচাই চলছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ঘটনাটি নিয়ে এলাকাজুড়ে চলছে নানা আলোচনা। কেউ বলছেন ‘অপহরণের নাটক’, কেউ মনে করছেন ব্যক্তিগত বিভ্রান্তি থেকেই ঘটেছে এই কাণ্ড।
বিজ্ঞাপন








