ধুনটে অতিথি পাখির কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল

শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। তার মধ্যে শামুকখোল পাখি অতি পরিচিত। এরা অতিথি পাখি হলেও বেশ কয়েক বছর আগে থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এদের সারা বছরই দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
শীতকালে এদের বিচরন সাধারন মানুষের চোখে পড়ার মত। সারা দেশের ন্যায় বগুড়ার ধুনটেও অতিথি পাখি হিসেবে শামুকখোল বেশ পরিচিত।
শীত এলেই বাংলার প্রকৃতি এক ভিন্ন রূপ ধারণ করে। ভোরের আকাশ ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে, মাঠ-ঘাট, জলাশয় আর গাছপালার ওপর শিশির ফোঁটা যেন মুক্তোর মতো ঝিলমিল করে। এই কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালগুলোতে আমাদের দেশের জলাভূমি ও হাওর অঞ্চলে দেখা মেলে এই বিশেষ অতিথি পাখি শামুকখোল। শামুকখোল মূলত পরিযায়ী পাখি।
শীত মৌসুমে খাদ্য ও নিরাপদ আবাসের সন্ধানে এরা দূর-দূরান্ত থেকে বাংলাদেশে আসে। এ পাখিটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর বাঁকানো ও শক্ত ঠোঁট দিয়ে সহজেই জলাশয়ের শামুক ভেঙে খেতে পারে। এ কারণেই মুলত এর নামকরণ হয়েছে শামুকখোল।
বিজ্ঞাপন
শীতের সকালে যখন সূর্যের আলো ধীরে ধীরে কুয়াশা ভেদ করে নেমে আসে, তখন শামুকখোল দলবেঁধে খাবারের সন্ধানে নামে। জলাভূমিতে বিচরন করে এবং শামুক, জলজ উদ্ভিদ ও ছোট জলজ প্রাণী খেয়ে থাকে। এই পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করে থাকে।
দুঃখজনক হলেও সত্য ধুনট উপজেলায় বর্তমানে প্রাকৃতিক জলাভূমি হ্রাস, পরিবেশ দূষণ ও নির্বিচারে পাখি শিকারের কারণে শামুকখোলসহ অনেক অতিথি পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অথচ এই পাখিরা আমাদের প্রকৃতির সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্যের অমূল্য অংশ। শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে শামুকখোলের উপস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রকৃতিকে ভালোবাসা ও সংরক্ষণের দায়িত্বের কথা। শামুকখোল শুধু একটি অতিথি পাখিই নয়, এটি আমাদের পরিবেশের এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তাবাহক। শীতের প্রতিটি কুয়াশামাখা সকালে এই পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। প্রকৃতি বাঁচলে তবেই ফিরে আসবে শীতের সেই মায়াবী সকাল আর শামুকখোলের নীরব সৌন্দর্য।








