বড়লেখায় দুই ভাই হত্যাকাণ্ড, যা বলছে জেলা পুলিশ

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় দুই ভাই নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়নি জেলা পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিনের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৭ ডিসেম্বর বড়লেখা থানাধীন দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের বিওসি মাঠগুদাম এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জামাল উদ্দিন ও আব্দুল কাইয়ুম নামে দুই ভাই নিহত হন। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টিকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসেবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তবে প্রাথমিক অনুসন্ধানে এই ঘটনার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং অন্যদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ সবাইকে যাচাই-বাছাই ছাড়া গুজব বা অপপ্রচার না করার আহ্বান জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আহত অবস্থায় আটক ব্যক্তি জমির উদ্দিনকে পুলিশি পাহারায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের বিওসি কেছরিগুল গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত আব্দুস সবুরের ছেলে।
রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর নিহতদের পরিবার মামলা করবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, শনিবার সন্ধ্যায় বড়লেখার বিওসি কেছরিগুল (মাঠগুদাম) এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহতরা হলেন—কুয়েতপ্রবাসী জামাল উদ্দিন (৫৫) এবং তার ছোট ভাই কৃষক আব্দুল কাইয়ুম (৪৮)।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, নিহত দুই ভাইয়ের সঙ্গে প্রতিপক্ষের দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। শনিবার সন্ধ্যায় ফসলি জমি নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়, এতে ঘটনাস্থলেই দুই ভাই প্রাণ হারান। হামলার সময় প্রতিপক্ষের এক সদস্যও আহত হন।
বিজ্ঞাপন
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান খান জানান, নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহত অবস্থায় একজনকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নিহত জামাল উদ্দিন ও আব্দুল কাইয়ুম ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের মৃত্যুতে দুই পরিবারই চরম মানবিক সংকটে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।








