Logo

মেহেরপুরে শীতের তীব্রতায় জনজীবন নাকাল

profile picture
উপজেলা প্রতিনিধি
মেহেরপুর
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৮:০৪
2Shares
মেহেরপুরে শীতের তীব্রতায় জনজীবন নাকাল
ছবি: প্রতিনিধি

মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এতে বিপাকে পড়েছেন এ জেলার খেটে খাওয়া মানুষ। একদিকে শৈত্য প্রবাহ অন্যদিকে ঘন কুয়াশার ফলে অসুবিধায় পড়েছেন দিনমজুর, যানবাহন চালক ও পথচারীরা।

বিজ্ঞাপন

পৌষের শুরুতেও ছিল না শীতের তীব্রতা। মাঝামাঝি সময়ে শীতের তীব্রতা বাড়লেও গত চারদিনে শুরু হয়েছে হাড় কাঁপানো শীত। শীতবস্ত্রের অভাবে কাবু হয়ে পড়ছেন অনেক অসহায় ও দরীদ্র পরিবারের শিশু-বৃদ্ধরা।

খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টাও করছেন তারা। শীতে গবাদিপশু নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে খামারিদের। এ ধরনের শীত আরো কয়েকদিন থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।

সোমবার সকাল থেকে বুধবার দুপুর দুইটা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। প্রচন্ড শীত ও কুয়াশার কারণে খেটে খাওয়া মানুষের কষ্টের শেষ নেই। কনকনে শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকেই। তবুও পেটের তাগিদে কাউকে রিকশা, ভ্যান বা ক্ষেত খামারে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে। অনেকই শীত নিবারনের জন্য খড়কুড়া জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

মহাম্মদপুর গ্রামের দিনমজুর কালাম জানান, প্রতিদিন সকালে মাঠে জমিতে কাজে যেতে হয় যতই কুয়াশা বা শীত পড়ুক না কেন। কারণ কাজ করলে মুখে ভাত উঠবে। ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করে, তাদের খরচ জোগাতে হয়।

গাংনী পৌর এলাকার নজরুল ইসলাম জানান, সকাল বেলা শীতের পোশাক খুলতেই দুপুর ১২টা বেজে যাচ্ছে। আর আজতো শীতের পোশাক খোলার সাহসই পাইনি কাজ করব কখন।

বিজ্ঞাপন

গাংনী পৌর এলাকার ৩ নং ওয়াডের বুদু মিয়া বলেন, প্রচন্ড শীতে লোকজন বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। তাই যাত্রী শংকটে ভাড়াও হচ্ছে না। সারাদিন গাড়ি চালিয়ে ২/৩শ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এদিকে অটো চালাতে গিয়ে হাত-পা ঠান্ডায় শক্ত হয়ে যাচ্ছে।

পাখিভ্যান চালক বাশার জানান, শীত লাগলেও কিছু করার নেই। পরিবারের লোকজনদের দু’মুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে হলে কষ্ট করতেই হবে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, ঘন কুয়াশা আর প্রচন্ড শীতে জবুথবু হয়ে পড়ছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। আর এই ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলার যত্ন নিতে হবে। আর ধানের চারার যাতে ক্ষতি না হয় সে জন্য সকালেই চারার মাথার শিশিরগুলো ফেলে দিতে হবে। এবং বীজতলা জমিতে ৩ থেকে ৪ সেন্টিমিটার পানি রাখতে হবে এবং দুই তিনদিন পর পর পানি পরিবর্তন করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, গত মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় মেহেরপুরের তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৮৬% শতাংশ। বর্তমানে মাঝারি শৈতপ্রবাহ চলছে। দুপুরের সূর্যের দেখা মেলার কথা থাকলেও তা দেখ যায়নি। আজ বুধবার সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা পড়ছে ৮ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আদ্রতা ৯৬% শতাংশ তবে তিনি আরও বলেন আগামী কয়েকদিন জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএন্ডএফপিও আব্দুলাহ্ আল আজিজ জানান, প্রচন্ড শীতে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা কাবু হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালে এখন বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। দেখা দিয়েছে হাছি সর্দি কাশি ও হাপানী রোগ। শীত জনিত রোগে ডাইরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। শিশুদেরকে গরম পোশাক পরিধানের পাশাপাশি ঘরের বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দিলেন এই চিকিৎসক।

বিজ্ঞাপন

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান, কয়েকদিন আগে কিছু কম্বল এসেছিলো সেই গুলো আমরা বিতরণ করেছি এবং বিভিন্ন গ্রামের অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি কম্বল পৌছে দিচ্ছি। সেই সাথে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন এই এলাকায় যদি কোন বিত্তবান ব্যাক্তি থাকে তাহলে হতদরিদ্র পরিবারের পাশে এসে দাঁড়াবেন ইনশাআল্লাহ।

জেবি/এসএ
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD