জাজিরায় মালচিং পদ্ধতির সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

বর্তমানে সবজি চাষে জমি প্রস্তুতকরণে আধুনিক পদ্ধতি কাজে লাগাচ্ছেন অনেক কৃষক।
বিজ্ঞাপন
এরমধ্যে শরীয়তপুরের জাজিরায় মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কম খরচে অধিক ফলন ও বেশি লাভ হওয়ায় মালচিং পদ্ধতির কৃষিতেই ঝুঁকেছেন এ উপজেলার কৃষকেরা।
আধুনিক এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে এরই মধ্যে সফল হয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চাষিরা। তাদের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে নতুন করে অনেকেই শুরু করছন মালচিং পদ্ধতির সবজি চাষ।
বিজ্ঞাপন
চলতি মৌসুমে উপজেলার বড় গোপালপুর, মূলনা, সেনেরচর, জয়নগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে এ পদ্ধতির সবজি চাষ দেখা গেছে। প্রচলিত পদ্ধতিতে ফসল ফলানোর পাশাপাশি মালচিং পদ্ধতিতে নানান ধরনের শাক-সবজি চাষ করেছেন কৃষকরা।
স্থানীয় সবজি চাষীরা জানান, প্রচলিত সমতল পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে কয়েকটি অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। এরমধ্যে আগাছা পরিষ্কার করা সবচেয়ে বড় সমস্যা। এ কাজে প্রচুর লোকবলের প্রয়োজন হয়, এজন্য উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। তবে মালচিং পদ্ধতির চাষাবাদে আগাছা পরিষ্কারের ঝামেলা নেই। রোগবালাই কম হয় ও দীর্ঘমেয়াদি ফলন দেয়। এছাড়াও একবার জমি তৈরি করলে একই জমিতে অন্তত দুইবার ফসল করা যায়। এতে জমি প্রস্তুতের খরচও কমে। এজন্য স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে এ পদ্ধতির সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে চলতি বছর উপজেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা করা হয়েছে ১৪'শ ৬৫ হেক্টর। ইতোমধ্যে প্রায় ১' হাজার হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ করা হয়েছে। যারমধ্যে আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয়েছে ৩'শ ১০ হেক্টর জমি। খুব শীগ্রই সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: চলনবিলে কচুরিপানা এখন কৃষকদের বুকে কাটা
মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা কৃষক মোক্তার হোসেন বলেন, গতবছর অন্যদের দেখাদেখি তিনিও পাঁচ কাঠা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে শসার আবাদ করেছিলেন। ফলন ভালো এবং আগাছা পরিষ্কার করতে খরচ না হওয়ায় ভালো লাভ হয়েছিলো। তাই এবছর পনেরো কাঠা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে শসা ও মরিচ লাগিয়েছেন।
লাল মিয়া মাদবর নামে আরেক কৃষক বলেন, কয়েকবছর আগে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা আমরা জানতাম না। অন্য এলাকা থেকে দেখে আমি এই পদ্ধতির চাষাবাদ শিখেছি। এবছর আমি করল্লা, শসা ও মরিচের আবাদ করেছি। এখন অনেকেই মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করেন।
বিজ্ঞাপন
এছাড়াও স্থানীয় কৃষক রফিক মাদবর, নজরুল হোসেন, আবুল হোসেন, জামাল মাদবরসহ মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা কৃষকরা জানান, মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে কীভাবে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তারা। তারা জানান, মালচিং পদ্ধতি হচ্ছে বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি বিশেষ পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে সারের ব্যাবহার কম করা লাগে। সেচ দিতে ও ফসল তুলতেও সুবিধা হয়।
আধুনিক মালচিং পদ্ধতির কৃষি নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ ওমর ফারুক বলেন, আমরা সবসময়ই চাই কৃষকরা অল্প জমিতে বেশি ফসল উৎপাদন করে লাভবান হোক। এজন্য উপজেলা কৃষি অফিস দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। মালচিং পদ্ধতির চাষাবাদ একটি আধুনিক কৃষি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে কৃষক অধিক লাভবান হয়ে থাকে। এজন্য আমরা আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে কৃষকদের উৎসাহিত করে থাকি। মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি আমরা কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে মালচিং শীট বিতরণ এবং প্রদর্শনীর ব্যাবস্থা করেছি।








