রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ

সুইমিংপুলে ডুবে মৃত্যুবরণ করা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের(রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোছা.সায়মা হোসেনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আজ প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা প্রকাশিত হয়নি।
বিজ্ঞাপন
এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের প্রশাসন ভবনের সামনে টায়ার পুড়িয়েও বিক্ষোভ করতে দেখা যায়৷
এ সময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, সাইমা সাইমা', বিচার বিচার বিচার চাই, সাইমা হত্যার বিচার চাই', আমার বোন মরল কেনো প্রশাসন জবাব দে', প্রশাসনের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও', কথা ছিল তিন দিন, বিচার পাব কোনদিনসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীরা বলছেন, সায়মার মৃত্যু কি স্বাভাবিক না কোনো গাফিলতির কারণে হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে তারা প্রশাসন কতৃক গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের সময় দিয়েছিল। কিন্তু তিন দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও প্রশাসন নিশ্চুপ হয়ে আছে। জুলাই আন্দোলনের ফলে যারা প্রশাসনের চেয়ারে বসেছে তারা কি আদৌও শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো প্রশাসন? যতক্ষণ পর্যন্ত সুষ্ঠু কোনো রিপোর্ট প্রকাশ না করা হবে ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব৷
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনরত সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ‘আজকে আমাদের সায়মা আপুর হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসন এখনো তা দেয়নি। এ জন্য আজ আমরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে একত্রিত হয়েছি। প্রশাসন আমাদের ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও আমরা কোনো প্রতিবেদন পাইনি। আমরা এখানে সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদনের দাবিতে একত্র হয়েছি এবং এটি আদায় করেই আমরা এখান থেকে যাব, ইনশাআল্লাহ!
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশাসন সময় নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও তারা এই জায়গায় কেন গাফিলতি করল? আরেকটা বিষয় হল তারা যেহেতু তদন্ত প্রতিবেদন দেবে, সেহেতু যেন সঠিক প্রতিবেদন দেয়—এখানে যেন কোনো খামখেয়ালি না থাকে। এমনটা যেন না হয় যে, যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের প্রশাসন বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমরা চাই, যারা সায়মা হত্যার সময় উপস্থিত ছিল এবং দায়িত্বে অবহেলা করে সায়মাকে রেসকিউ করতে পারেনি, তাদের যেন চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়াও, সায়মার পরিবারকে যেন এককালীন অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং তার ভাইকে যেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।”
বিজ্ঞাপন
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, রাকসু প্রতিনিধিদের অবস্থান এই বিষয়ে সম্পূর্ণ স্পষ্ট। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, তদন্ত কমিটি এবং প্রশাসনের সঙ্গে আমরা রাকসু প্রতিনিধিরা একসঙ্গে সিনেটে বসব। তারা আমাদের কাছে কিছু সময় চেয়েছেন এবং জানিয়েছেন যে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সিনেটে তদন্ত রিপোর্ট সবার সামনে প্রকাশ করা হবে। আমরা তাদেরকে সে পর্যন্ত সময় দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, রাকসুর প্রতিনিধিরা এখনো পর্যন্ত ভবনে বসেননি এবং প্রথম অধিবেশনও শুরু হয়নি। তবে অধিবেশন শুরু হলেই রাকসুর প্রতিনিধিরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দুই মিনিটও সময় নেবেন না।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, নিহত শিক্ষার্থীর সায়মা হোসেনের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে নামলে তিনি পানিতে ডুবে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রতিবাদে ওই দিন রাতেই ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা এবং সায়মার মৃত্যুর তদন্ত করতে ৭২ ঘন্টার সময় দিয়েছিল তারা৷








