রাজউকের জোন-৬ মহাখালীতে স্থানান্তরে সেবা না পাওয়ার আশঙ্কা গ্রাহকদের

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) মূলত ঢাকা শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার উন্নয়ন ও পরিকল্পনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। কিন্তু বাস্তবে এ সংস্থা এখন সাধারণ নাগরিকের কাছে পরিচিত সেবা না পাওয়া হয়রানির কেন্দ্র হিসেবে, গ্রাহক হয়রানীর আরেক নাম জোনাল অফিস (জোন-৬) স্থানান্তরের ঘোষণা।
বিজ্ঞাপন
রাজধানীর ২৭টি থানা ও ৯৭টি মৌজা নিয়ে গঠিত। উল্লেখযোগ্য মৌজা ডেমরা, কোনাপাড়া, মাতুইয়াল,খিলগাঁও, নন্দীপাড়া, তিরমহনি,দক্ষিণ গাঁও,মান্ডা রামপুরা, হাতিরঝিল, মালিবাগ, সিদ্ধেশ্বরী, মৌচাক, বেলীরোড, কাকরাইল ও পল্টনসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকাবাসী কাঙ্খিত সেবা না পাওয়ার ভয়ে ক্ষোভ প্রকাশ।
এলাকাবাসীরা বলেন, ঢাকার কেন্দ্রীয় স্থল ও রাজউক প্রধান কার্যালয় মতিঝিল। রাজউক জোন-৬ এর নিয়ন্ত্রানাধীন এলাকা মতিঝিল থেকে খুবই নিকটবর্তী হওয়ায় আমরা মানসম্মত সেবা পেয়ে থাকি, কিন্তু রাজউকের মাধ্যমে জানতে পারলাম আগামী জানুয়ারি থেকে রাজউকের জোন-৬ অফিস সরিয়ে মহাখালী নেয়ার পরিকল্পনা চলছে। যদি এই আদেশ বাস্তবায়ন হয় তবে সাধারণ গ্রাহকদের চরম দুর্ভোগে পরতে হবে।
বিজ্ঞাপন
ডেমরা খিলগাঁও হাতিরঝিল থেকে যতোটা সহজে মতিঝিল যাওয়া যায়। মহাখালীতে যাওয়ার তেমন কোনো সুবিধাজনক সুযোগ নাই। একে তো দূরত্ব তারপরে যাতায়াতের বড় সমস্যা।
মতিঝিল থেকে রাজউকের জোনাল অফিস সরিয়ে নিলে হাজার হাজার প্লট মালিক ও লক্ষ লক্ষ বাসিন্দা চরম ভোগান্তিতে পড়বে।
খিলগাঁও বাসিন্দা সুরুজ মিয়া জানান, রাজউকের সেবাগুলো আমরা দীর্ঘদিন ধরেই মতিঝিল জোনাল অফিস থেকে পেয়ে আসছি। এই মতিঝিল রাজউকের হাজারো সেবাগ্রহীতা রয়েছে। এখন যদি রাজউকের এই সেবা অফিস মতিঝিল থেকে সরিয়ে মহাখালী নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে খিলগাঁওসহ আশপাশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে হয়রানির শিকার হতে হবে।
বিজ্ঞাপন
বিশেষ করে খিলগাঁওসহ আশপাশ থেকে মহাখালী যাত্রাপথে যানজট ও ট্রাফিক জ্যামে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হবে বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ গোড়ানের আরেক বাসিন্দা চান মিয়া বলেন, রাজউকের মতিঝিল জোনাল অফিস সরিয়ে নিলে সেবার জন্য আমাদেরকে মহাখালী যেতে হবে। অনেক বাড়ি ও ফ্ল্যাট মালিক বৃদ্ধ হওয়ায় তারা যানজট পেরিয়ে কিভাবে মহাখালী গিয়ে রাজউকের সেবা নিবে? এই বিষয়গুলো অবশ্যই কর্তৃপক্ষকে ভাবা উচিত। অন্যথায় আমরা রাজউক কর্তৃপক্ষের আদেশ মানি না।
বিজ্ঞাপন
বনশ্রী এলাকার আমান উল্লাহ বলেন, এই জোনাল অফিসের অধীনে আমরা শতশত গ্রাহক আছি। রাজউকের কাজকর্ম এখান থেকে সরিয়ে নিলে আমরা বনশ্রীর বিশাল জনগোষ্ঠী একটা হয়রানির মধ্যে পড়ে যাব। তাই এলাকাবাসীর সুবিধার্থে কর্তৃপক্ষের উচিত রাজউক জোন-৬ অফিস স্থানান্তর আদেশ প্রত্যাহার করা। অন্যথায় এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজউকের প্রধান কার্যালয় ঘেরাও ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না।
১৯৫৬ সালে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহের উন্নয়ন ও পরিবর্ধনের বিশেষ ক্ষমতা নিয়ে সর্ব প্রথম ‘ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট’ (ডিআইটি) প্রতিষ্ঠিত হয় দ্য টাউন ইমপ্রুভমেন্ট এক্ট, ১৯৫৩ এর আওতায়।
ট্রাস্টি বোর্ডের অধীনে পরিচালিত তৎকালীন ডিআইটি পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে উক্ত আইন সংশোধনের মাধ্যমে ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ (রাজউক) হিসেবে পরিবর্তন করে। বর্তমানে রাজউকের আয়তন ১,০৯৪ বর্গকিলোমিটার।
বিজ্ঞাপন
রাজউক কর্মকর্তারা জানান, রাজউকের কেন্দ্রীয় অফিস ব্যতীত উত্তরা এবং মহাখালীর অফিস ছিল। কিন্তু গত ২-৩ বছরের মধ্যে বাকি জোনগুলোর অফিসও আলাদা হয়ে যায়। উত্তরাতে জোন-১ ও জোন-২ এর অফিস, মহাখালীতে জোন ৩ ও ৪, পান্থপথে জোন-৫, মতিঝিলে আলাদা আলাদা ভবনে জোন ৬ ও ৭ এবং সাইনবোর্ডে জোন-৮ এর অফিস রয়েছে।








