প্লট দুর্নীতি: জয় ও পুতুলের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে করা দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার আগে আদালতপাড়ায় নজিরবিহীন নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়, যাতে কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।
গত রবিবার মামলার একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি—রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। অপর আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষ থেকে কোনও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা যায়নি এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও তারা পাননি।
বিজ্ঞাপন
রাষ্ট্রপক্ষের দুদক প্রসিকিউটর খান মো. মাইনুল হাসান জানান, তারা এই মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি— যাবজ্জীবন কারাদণ্ড—প্রত্যাশা করেছিলেন।
অন্যদিকে খুরশীদ আলমের আইনজীবী শাহীনুর রহমান দাবি করেন, দুদক তার মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ছয়টি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব মামলায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়।
শেখ পরিবারের বাইরে আরও যাদের নাম রয়েছে— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ তিনটি মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। বাকি তিন মামলার অভিযোগ গঠন হয় বিশেষ জজ আদালত-৪-এ।
বিজ্ঞাপন
বিভিন্ন মামলার তদন্ত বিবরণ অনুযায়ী— ১৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তদন্ত শেষে আসামি বাড়ে ১২ জনে। ১২ জানুয়ারি পুতুল ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়; তদন্ত শেষে দাঁড়ায় ১৮ জনে। ১৪ জানুয়ারি জয় ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করে করা মামলায় তদন্তের পর আসামি হয় ১৭ জন।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন, যদিও তারা এই বরাদ্দের যোগ্য ছিলেন না। অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রভাব খাটিয়ে অন্যদেরও একইভাবে অবৈধ সুবিধা দেওয়া হয়।








