হাদিকে গুলি: ফয়সালকে পালাতে সাহায্যকারী দিল চাঞ্চল্যকর তথ্য

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল আদালতে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালতে নুরুজ্জামান নোমানীর রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিজ্ঞাপন
রিমান্ড শুনানিতে নুরুজ্জামান নোমানী জানান, হত্যাচেষ্টার দিন ১২ ডিসেম্বর প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করেন। ওই দিন গাড়িটির গন্তব্য তিন দফা পরিবর্তন করা হয়। প্রথমে গাড়িটি ঢাকার মৎস্য ভবনের সামনে পাঠাতে বলা হয়। পরে জুমার নামাজের পর আগারগাঁওয়ের বিএনপি বাজারে গাড়ি পাঠানোর নির্দেশ আসে। সর্বশেষ গাড়িটিকে ধামরাই উপজেলার কালামপুরে যেতে বলা হয়। সেখান থেকে ফয়সাল গাড়িতে উঠে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা দেন।
নুরুজ্জামান দাবি করেন, গাড়ি ভাড়ার সূত্র ধরেই ফয়সাল করিমের সঙ্গে তার পরিচয়। গত তিন মাস তাদের সরাসরি দেখা না হলেও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল।
তিনি বলেন, প্রায় নয় মাস আগে অনলাইনে গাড়ি ভাড়ার যোগাযোগ শুরু হয়। তিনি শুধু গাড়ি ভাড়া দিয়েছেন, ফয়সাল কী কাজে এটি ব্যবহার করেছেন তা তিনি জানতেন না।
বিজ্ঞাপন
হত্যাচেষ্টার দিন ফয়সাল পারিবারিক কারণ দেখিয়ে গাড়ি ভাড়া করতে চান বলে জানান নুরুজ্জামান। শুরুতে নিজের গাড়িগুলো ব্যস্ত থাকায় তিনি রাজি হননি। পরে বন্ধু সুমনের গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন।
তিনি আরও জানান, প্রথমে মৎস্য ভবনের সামনে গাড়ি পাঠানোর কথা বলা হলেও পরে ফয়সাল স্থান পরিবর্তনের কথা জানান। বিএনপি বাজারে গাড়ি পৌঁছানোর পর আবার গন্তব্য বদলে কালামপুরে পাঠাতে বলা হয়। সেই অনুযায়ী চালক সুমনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
শুনানির একপর্যায়ে বিচারক চালকের বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুজ্জামান জানান, তিনি চালককে চেনেন এবং তাকেও ডিবি পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় শরিফ ওসমান হাদি রিকশাযোগে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুজনের একজন তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিতে মাথায় গুরুতর আহত হন হাদি। এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে শনাক্ত করেছে। তারা হলেন— ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান (প্রধান সন্দেহভাজন শুটার) এবং আলমগীর হোসেন (মোটরসাইকেল চালক)। এ ছাড়া ফয়সাল করিমের স্ত্রী, প্রেমিকা ও শ্যালককে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।








