হাদি হত্যা মামলায় পালাতে সহায়তার অভিযোগে সিবিউন-সঞ্জয়ের ফের রিমান্ড

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদকে ভারতে পালাতে সহায়তার অভিযোগে গ্রেপ্তার সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
বিজ্ঞাপন
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল।
রিমান্ড শেষে সিবিউন ও সঞ্জয়কে আদালতে হাজির করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তাদের পুনরায় সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, সীমান্ত পারাপারকারী একটি চক্রের হোতা হিসেবে ‘ফিলিপ’ নামের এক ব্যক্তির সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। সিবিউন ও সঞ্জয় তার নেতৃত্বে কাজ করতেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ফিলিপের অবস্থান শনাক্ত, তাকে গ্রেপ্তার এবং তার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না— তা জানতে আসামিদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয় আবেদনে। পাশাপাশি কিলিং মিশনের সঙ্গে কারা যোগাযোগ রেখেছিল, সে তথ্য উদ্ঘাটনের প্রয়োজনীয়তার কথাও জানানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন— প্রধান আসামি ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্টকার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, সহযোগী মো. কবির এবং ভারতে পালাতে সহায়তাকারী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।
বিজ্ঞাপন
গ্রেপ্তারদের মধ্যে হুমায়ুন কবির ও হাসি বেগম আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। রিমান্ড শেষে নুরুজ্জামান নোমানীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিরা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর মতিঝিলে জুমার নামাজ শেষে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাচ্ছিলেন ওসমান হাদি। দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলযোগে আসা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের পর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় হত্যাচেষ্টা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার এবং অপরাধে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।








