অস্ট্রেলিয়ার সর্বকনিষ্ঠ সিনেটর আফগান কন্যা ফাতিমা
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
দেশের প্রতি ভালোবাসা ছিল প্রচণ্ড তবুও তালেবানের ভয়ে দেশ ছাড়া এক শরণার্থীর মেয়েই এখন আন্তর্জাতিক সংবাদের শিরোনামে। তিনিই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম হিজাব পরিহিতা সিনেটর ফাতিমা পেম্যান। একই সাথে এই মুহূর্তে সেদেশের সিনেটে সর্বকনিষ্ঠাও তিনি। তিনিই প্রথম আফগান মুসলিম, যিনি অস্ট্রেলিয়ার আইনসভায় জায়গা করে নিয়েছেন।
গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার সেনেটর হিসাবে দায়িত্ব নেন ২৭ বছরের ফাতিমা। প্রথম আফগান-অস্ট্রেলীয় হিসাবে সেনেটের ইতিহাসে ঢুকে পড়লেও এনিয়ে উচ্ছাস দেখাতে নারাজ পোষণ করে তিনি জানিয়েছেন, “আমি এমন দিনের আশায় রয়েছেন, যখন শুধুমাত্র হিজাব পরা সেনেটর বা মন্ত্রী হিসেবে তিনি আলোচিত হবেন না।”
ফাতিমা পেম্যান বলেন, “কেউ যদি বড়সড় শর্টস বা চপ্পল পরেন, সেটা নিশ্চয়ই তাঁর পরিচয় হতে পারে না। আমি সেভাবে কাউকে বিচার করি না। সুতরাং মাথায় এক টুকরো স্কার্ফ পরাটাই আমাকে বিচারের মাপকাঠি হতে পারে না। আমিও বাকি অস্ট্রেলীয়দের মতোই। আমি অস্ট্রেলীয় কিন্তু জীবন আদৌ মসৃণ ছিলো না। বাবা ছিলেন আফগানিস্তানের বাসিন্দা। হাজারা জাতির হওয়ায় আমি বেশি দিন থাকতে পারেননি নিজ দেশে।”
১৯৯৫ সালে ফাতিমার জন্মের পাঁচ বছর পর, চার সন্তান এবং স্ত্রীকে ছেড়ে তাঁর বাবা বাধ্য হন দেশ ছাড়তে। তালেবানের ভয়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন ফাতিমার বাবা। এরপর ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার গিয়ে পৌঁছন তিনি। এক সময় নিজের পরিবারকে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে আসেন তিনি। ফাতিমার তখন আট বছর বয়স। অস্ট্রেলিয়ার ইসলামিক কলেজ থেকে ফার্মাসি নিয়ে পড়াশোনা করা ফাতিমা ২০১৮ সালে পা রাখেন রাজনীতির আঙিনায়। যোগ দেন ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নে। পাশাপাশি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় ইয়ং লেবার দলেও নাম লিখিয়েছিলেন।
চলতি বছরে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া থেকে সেনেটর পদের দৌড়ে নামেন ফাতিমা। প্রথম চেষ্টাতেই সাফল্য। তবে প্রথম দফাতেই যে একেবারে সেনেটে পৌঁছে যাবেন, তা স্বপ্নেও ভাবেননি। লেবার পার্টির হয়ে বিজেতা ফাতিমাই হলেন সে দেশের তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ সেনেটর। এই মুহূর্তে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ অস্ট্রেলীয় সেনেটর।
সেনেটর হিসাবে নিজের লক্ষ্যও জানিয়ে দিয়েছেন ফাতিমা। শিশুশিক্ষার মান উন্নত করা এবং পরিবেশ রক্ষার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে আগ্রহী এই অস্ট্রেলীয় সেনেটর।
আরও একটি ইচ্ছে রয়েছে ফাতিমার। হিজাব যে অন্যান্য পোশাকের মতোই ‘স্বাভাবিক’, সে কথাও সবার মনে গেঁথে দিতে চান তিনি।
এসএ/