পঞ্চাশে পা দিলাম, বয়স শুধু একটা সংখ্যা: শ্রীলেখা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পঞ্চাশে পা দিলাম, বয়স শুধু একটা সংখ্যা: শ্রীলেখা

টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। অভিনয় হোক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্যানদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, সব ক্ষেত্রেই খবরে শিরোনামে উঠে আসেন এই অভিনেত্রী। 

কিছুদিন আগেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন, এবারের জন্মদিনে নিজের আসল বয়স প্রকাশ আনবেন তিনি। কারণ তার মতে, বয়স স্রেফ একটা সংখ্যা মাত্র।

আজ (৩০ অগাস্ট) জন্মদিন শ্রীলেখার। মধ্যরাত থেকেই তাঁর বাড়িতে শুরু হয়ে গিয়েছে সেলিব্রেশন। মেয়ে মাইয়্যা তো ছিলই, সঙ্গে ছিলেন শ্রীলেখার জিম পার্টনার ত্র্যম্বকরায় চৌধুরীসহ আরো কয়েকজন বন্ধুবান্ধব। বেইজ রঙা পোশাকে সেজেছিলেন শ্রীলেখা। সঙ্গে মানানসই হালকা জাঙ্ক জুয়েলারি। হলুদ কালো বেলুনে সেজে উঠেছিল পার্টি।

মেয়ে মাইয়্যার সঙ্গে ‘উ আনটাভা’ গানে চুটিয়ে নাচতে দেখা গেল শ্রীলেখাকে। এর মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়া লাইভে এসেছিলেন শ্রীলেখা। কেক কাটার আগে ৫০ লেখা বেলুন হাতে ধরে নেটনাগরিকদের উদ্দেশে তিনি বলে ওঠেন, ‘১৯৭২ এ জন্ম। আমি পঞ্চাশে পা দিলাম। এজ শেমিং করতে চাইলে করো। কিচ্ছু যায় আসে না।’

সঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘আমার মেয়েকে যতগুলো ছেলে দেখবে তার থেকে একটা বেশি ছেলে আমায় দেখবে। মাইয়্যা তখন মন দিয়ে কেকের উপরে মোমবাতি জ্বালাতে ব্যস্ত।’

শ্রীলেখা বলে চলেন, ‘আগে বলা হত মেয়েরা কুড়িতেই বুড়ি। আমরা বয়সের বাধাটাকে অনেক দূরে সরিয়ে দিয়েছে। বয়স শুধু একটা সংখ্যা। এটা শুধু আমাদের মনে রয়েছে। হাড়ের চিকিৎসকরাও এটাই বলেন। আমার এখন কোমরে বথ্যা হয়েছে।’

চুটিয়ে পার্টি করেছেন শ্রীলেখা। ছবি, ভিডিও শেয়ার করেছেন অনুরাগীদের জন্যও।
অভিনয়ের আগে শ্রীলেখার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল হসপিটালিটি দিয়ে। প্রথম জীবনে তাজ হোটেলে কর্মরত ছিলেন অভিনেত্রী। তবে এরই মাঝে পরিচালক দুলাল লাহিড়ীর নজরে এসেছিলেন শ্রীলেখা। শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকের ছোট খাটো চরিত্রে অভিনয়। ১৯৯৮ সালে বাসু চট্টোপাধ্যায়ের হঠাৎ বৃষ্টি ছবিতে অভিনয় করে শুরু হয় তাঁর পথ চলা। এই ছবির দারুন সাফল্য বাংলা ছবির দর্শকের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতাকে প্রসারিত করে।

এরপর দীর্ঘ ৬ বছর পর ২০০৪ সালে প্রদীপ সরকারের পরিচালনায় আমির খানের বিপরীতে কোকা-কোলার একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেন শ্রীলেখা মিত্র। মাঝে তাঁর বেপাত্তা হওয়ার কারণ ছিল স্বজন পোষণ। পরবর্তীকালে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। তাঁর দাবি স্বয়ং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রেম প্রস্তাব দিয়েছিলেন অভিনেত্রীকে। রাজি না হওয়ায় বঞ্চিত হয়েছিলেন।

এরপর ২০০৬ সালে বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাঁটাতার ছবিতে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর বিএফজেএ ও আনন্দলোক পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। ২০১১ সালে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় পরিচালিত উড়ো চিঠি ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ সহ-অভিনেত্রী বিভাগে পেয়েছেন জি বাংলা গৌরব সম্মান। ২০১৩ সালে অণীক দত্ত পরিচালিত ‘আশ্চর্য প্রদীপ’ ছবির জন্য পান ফিল্মফেয়ার পুরস্কার।

শুধু টলিউড নয়, ২০১৬ সালে রীমা মুখোপাধ্যায়ের ‘অর্ধাঙ্গিনী এক অর্ধসত্য’ ছবি দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি, পরিচালক আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত পরিচালিত ‘ওয়ানস আপন এ টাইম ইন ক্যালকাটা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য মার্কিন মুলুকে সেরা অভিনেত্রীর সম্মান ছিনিয়ে নিয়েছেন বাঙালি অভিনেত্রী।

এরই মাঝে আজ থেকে ১৯ বছর আগে ২০০৩ সালের ২০ নভেম্বর শিলাদিত্য সান্যালের সঙ্গে সাঁতপাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। কিন্তু সেই দিন আজ তাঁর কাছে অতীত। ২০১৩ সালে শিলাদিত্যর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় শ্রীলেখার। তাঁদের এক সন্তান, ঐশী। শ্রীলেখার কাছেই থাকে মেয়ে। দেখতে দেখতে সেও বড় হয়ে যাচ্ছে।

ওআ/