সকল সম্প্রদায়কে সমানভাবে তৈরী করতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০:৫০ অপরাহ্ন, ৮ই অক্টোবর ২০২২
একটি দেশকে উন্নত করতে হলে সকল সম্প্রদায়কে সমানভাবে তৈরী করতে হবে। তাই তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের কৃষ্টি কালচার যাতে হারিয়ে না যায়, তারা অন্য ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট না হয় সে জন্যই ১৯৬২ সাল থেকে আমরা এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছি।
আগে অল্প পরিসরে হলেও বর্তমানে তা বৃহৎ আকার ধারণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আমরা কোন ক্রমেই ভুলুষ্ঠিত হতে দিতে পারি না। আমাদের দেশ অসম্প্রায়িক দেশ। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। আমরা যার ধর্ম সে পালন করবো। প্রত্যেক ধর্মকে আমরা সম্মান করবো।
ধর্মের গোড়ামীকে আমরা পছন্দ করি না। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিলেন আজও তারাই বিরোধীতা করছে। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বেলা ৪টায় নওগাঁর নিয়ামতপুরের ঐতিহ্যবাহী শিবপুর বারোয়ারী দূর্গা মন্দির কমিটির আয়োজনে শিবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সমতল আদিবাসীদের মিলন মেলায় ঐতিহ্যবাহী সাঁওতালী নৃত্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী, নওগাঁ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কৃষ্টি কালচার যাতে হারিয়ে না যায় সে জন্য তাদের নিয়ে গঠন করা হয়ে ত্রিশুল না একটি সংগঠন। যা নেতৃত্ব দিচ্ছে সংগীত অনুরাগী তৃনা মজুমদার।
দেশের তৃতীয় বৃহত্তম দূর্গা মন্দির শিবপুর বারোয়ারী দূর্গা মন্দিরের আয়োজনে উত্তরবঙ্গের সর্ব বৃহৎ সমতল আদিবাসীদের এই মিলন মেলায় ঐতিহ্যবাহী সাঁওতালী নৃত্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী, নওগাঁ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপির উদ্যোগে এ নৃত্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আদিবাসী পুরুষ ও মহিলারা এ নৃত্য প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেন। এবারে দেশের ৯টি জেলা থেকে ৪২টি দল এই নৃত্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নৃত্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি নিজে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রধান অতিথি নিজেই প্রতিযোগিতাটি পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান, নওগাঁ পুলিশ সুপার রাশেদুল হক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ, নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইন চার্জ হুমায়ন কবির, ত্রিসূলের সভাপতি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের উন্নত জীবন যাপনের কর্ম পরিকল্পনাকারী ও ত্রিশুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তৃণা মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক ও সাপাহার জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ভুট্টু পাহান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান বিপ্লব।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাজিনগর ইউপি চেয়ারম্যান ও হাজিনগর ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি আঃ রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জন বিজয়পুরী, ভাবিচা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওবাইদুল হক, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ নিয়ামতপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অজিত মুন্ডা, আদিবাসী নেতা দয়াল দাস, উপজেলা প্রেস কাব সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জনি আহমেদ।
প্রতিযোগিতায় নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর, পোরশা, সাপাহার, রাজশাহী, দিনাজপুর, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট জেলা থেকে সমতল আদিবাসীদের প্রায় ৪২টি দল এ প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেন।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে মোট ০৯টি টেলিভিশন পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া অংশগ্রহনকারী প্রত্যেক দলকে শান্তনা পুরস্কার এবং যাতায়াত বাবদ ৩ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতা দেখতে হাজার হাজার আদিবাসী শিবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের মাঝে এলইডি টেলিভিশন পুরস্কার হিসাবে তুলে দেন।
আরএক্স/