আমন মৌসুমে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন শ্রীপুরের কৃষকেরা


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:২৬ পূর্বাহ্ন, ১৪ই অক্টোবর ২০২২


আমন মৌসুমে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন শ্রীপুরের কৃষকেরা
ছবি: জনবাণী

চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। বাতাসে আমন ধান গাছের সবুজ ঢেউ কৃষকদের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে ধান গাছের সবুজপাতা ও কাঁচা শীষ। কয়েকদিনের মধ্যেই শীষে দুধ-দানা বাধতে শুরু করবে।  


বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর ) সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সবুজের সমারোহে ছেয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ। আগত আমন ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন।


ধানের কাঁচা শীষ দেখে আনন্দে বুক ভরে উঠে কৃষকের মন। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথা সময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে এবার আমন চাষের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। ফলে মাঠে দোল খাওয়া সবুজ ধানে নতুন স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে শ্রীপুর উপজেলায় পৌরসভাসহ ৯ টি ইউনিয়নের ৫৭ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাইব্রিড জাতের ৩ হাজার ২২০ হেক্টর, উফশী জাতের ১০ হাজার ২০৫ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ২ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমি।


কিছুদিন পরেই ধানের সবুজ চারা এবং কাঁচা শীষ সোনালী বর্ণ ধারণ করবে। এরপর সোনালি ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষাণীর শূন্য গোলা। আমন মৌসুমকে ঘিরেই এমন স্বপ্ন দেখছে এ অঞ্চলের চাষিরা।এ বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, সার, বীজ ও বালাইনাশক সংকট কিছুটা থাকলেও সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় এ সংকট কেটে উঠেছেন কৃষকরা। ফলে ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর হয়েছে। ধানের সবল-সতেজ চারা এবং শীষ বের হয়েছে। তাই এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। 


উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের হয়দেবপুর গ্রামের আনোয়ার বলেন, রোপা আমন ধানের মাঠে সবুজের সমারোহ। প্রতিটি ধানের ক্ষেতে দুলছে সবুজপাতা। ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকের। কৃষকরা মাঠে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে সেচ, সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং পার্চিং ব্যবহার করছেন কেউ কেউ।


মাওনা ইউনিয়নের কৃষক বদনীভাংগা গ্রামের আলী হোসেন জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত আমন ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। আগামী মাসের শেষের দিকে ধান কাটা শুরু হবে। তখন পূরণ হবে আমাদের স্বপ্ন।


উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের কৃষক মাসুদ মিয়া, রুহুল, আয়নাল সহ অনেকেই জানান, এ বছর ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। কোনো ধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগ না ঘটলে গত বছরের তুলনায় এবার তারা ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবে। আরেক টেংরা গ্রামের কৃষক মেহেদী বলেন, ধান ক্ষেতে দুই দফায় সার-কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে। ধানগাছের চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে এবারে ভালো ফলন পাওয়া যেতে পারে। সরকার যদি ন্যায্যমূল্য দেয় তাহলে লাভবান হবেন তারা।


শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুদ্দুস মিয়া বলেন, আমন ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। তাই আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি।


আরএক্স/