আশুলিয়াতে এখন মাদক ও জুয়ার আখড়া


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০:২১ অপরাহ্ন, ২৫শে অক্টোবর ২০২২


আশুলিয়াতে এখন মাদক ও জুয়ার আখড়া
ছবি: জনবাণী

ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছেই মাদকাসক্তের সংখ্যা। ছোট থেকে বড় সব  বয়সের মানুষের  কাছেই ইয়াবা ও গাঁজা  অলিতে-গলিতে দেখা মেলে প্রতিনিয়ত। তবে মাদকের ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তারা সু-কৌশলে বহিরাগত কিছু মাদকসেবিদের দিয়ে সাপ্লাইয়ের কাজটি করান। যাতে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাঝে মধ্যে আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে মূল হোতারা। এদিকে আশুলিয়ার জিরাবো,বাগানবাড়ি, ঘোষবাগ, কালুরবাজার ও পুকুরপাড়,কুন্ডলবাগ এলাকায় বেড়েই চলছে মাদকাসক্ত ও মাদকসেবিদের সংখ্যা।


মাদকের টাকা জোগাড় করতে মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা জড়িয়ে পরছে  চুরি, ছিনতাই সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জিরাবো বাগানবাড়ি এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, প্রতিদিন দুপুরের দিকে জানালা খুলে রাখলেই ইয়াবার গন্ধে ঘর ভরে যায়। আবার সন্ধ্যার পরেই বিভিন্ন অলি গলি ও বাগানবাড়ির বাঁশঝাড়ে মাদকের আড্ডা জমে। কেউ এই মাদকাসক্তদের ভয়ে কিছুই বলতে পারে না।


রাত একটু গভীর হলেই মাদকসেবিরা মাতাল অবস্থায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর ও অভিযোগ পাওয়া যায়। অপরদিকে রাতে নাইট ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে কাছে থাকা মোবাইল, টাকা কিংবা দামি কোন জিনিস হারিয়ে কখনো কখনো নীরবে চুপ থাকতে হচ্ছে এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের।


গত আট মাস আগে কাজ শেষে বাসায় ফিরছিল রহিমা (৩০) বেগম নামের এক পোশাক শ্রমিক। পরে পশ্চিম জিরাবো বাগানবাড়ি বাঁশঝাড়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে চোখ বেঁধে  পাশের একটি ছাদে নিয়ে যায়। এরপর ধর্ষণ করে স্বর্নের দুল বেতনের টাকা ছিনিয়ে ছেড়ে দেয়। যা নিয়ে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ এবং পরবর্তীতে লোকলজ্জায় গ্রামে চলে যায়।


একই ঘটনা ঘটে আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকাতেও এসএসসি পরীক্ষা শেষে বোনের বাসায় এসে চাকরি নেয় দরিদ্র পরিবারের ছদ্মনাম কুলসুম আক্তার (১৯) এরপর সন্ধ্যার সময় বাসায় ফেরার পথে ঘোষবাগ স্ট্যান্ডের বাসের গ্যারেজের গলি থেকে তাকে পেছন থেকে মুখ চেপে চোখে কাপড় বেঁধে তুলে নিয়ে প্রথমে ধর্ষণ এরপর কানের দুল,চেইন ও মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। অবশেষে বোনকে সাথে নিয়ে লোকলজ্জায় সেও গ্রামে চলে যায় একেবারে।


এভাবেই অত্র এলাকার মাদকাসক্তদের দ্বারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানির স্বীকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। মুখ খুলতে চাইলেও প্রাণের ভয়ে অনেকেই নীরবে তা সহ্য করে নেয়।


আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে আশুলিয়া থানার ওসি কামরুজ্জামান পিপিএম জনবাণীকে বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে এখন বেশ কঠোর। মাদকের সহজলভ্যতার কারণে যদিও মাদকাসক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও প্রশাসনের চোখ তারা এড়াতে পারবে না। আমাদের কাছে বিচ্ছিন্ন ঘটনার কোন অভিযোগ আসা মাত্রই আমরা গুরুত্ব দিয়ে সেটি নিয়ে তৎপর থাকি।


অত্র অঞ্চলগুলোতে মাদক,জুয়ার আখড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আশুলিয়াতে অপরাধ ও অপরাধীর মাত্রা অতিরিক্ত হারে বেড়ে যাবে।


আরএক্স/