ফায়ার স্টেশনের কাজ শেষ হলেও উদ্বোধন নিয়ে টালবাহানা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, ১৪ই ডিসেম্বর ২০২২


ফায়ার স্টেশনের কাজ শেষ হলেও উদ্বোধন নিয়ে টালবাহানা
জুড়ী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে বেশ কয়েকমাস আগে। কাজ শেষ হলেও উদ্বোধন নিয়ে দেখা দিয়েছে দীর্ঘসূত্রতা। ফলে অগ্নি দুর্ঘটনার পর পার্শ্ববর্তী কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলার ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে হয়। ওই স্টেশনগুলো থেকে অগ্নি নির্বাপক গাড়ি আসতে বিলম্ব হয়। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। 


জুড়ী উপজেলার জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার। কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও উদ্বোধন না হওয়ায় উপজেলার কোথাও আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে আসতে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।


জানা যায়, এই উপজেলায় এতদিন ধরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় পাশ্ববর্তী কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলার সাহায্য নিতে হত। ফলে আগুন লাগার স্থানে উদ্ধারকারী দল আসার আগেই আগুনে পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়। 


সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়। প্রতিবছর শীতে উপজেলায় আগুন লাগার ঘটনা বেড়ে যায়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও উদ্বোধন না হওয়ায় জনমনে অজানা বিভ্রাটসহ নানাবিধ শঙ্কা বিরাজ করছে। বর্তমানে ফায়ার স্টেশন নির্মাণের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসলেও যথাসময়ে উদ্বোধন না হওয়ায় উপজেলাবাসী নতুন ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধনের প্রহর গুনছে।


নতুন ফায়ার স্টেশন হওয়ায় খুশি সংশ্লিষ্টসহ এলাকার বাসিন্দারা। তারা বলছেন, আগে আগুন লাগলে নিজেরাই নির্বাপণ করতেন। ফায়ার স্টেশন পাশের উপজেলায় হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে অনেকটা সময় লেগে যেত। আর এতে আগুনে প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হতো। নতুন ফায়ার স্টেশন হওয়ায় এই আশঙ্কা মন থেকে দূর হয়েছে সাথে স্বস্তিও ফিরেছিল উপজেলাবাসীর। তাদের মনে এখন একটাই ভরসা, শুধু অগ্নিকান্ডে নয় প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যেকোন দুর্ঘটনায় অল্প সময়ে ও খুব সহজে সেবা মিলবে ফায়ার সার্ভিসের। উপজেলার সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করছেন অতি দ্রুত উদ্বোধন করা হোক এ নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনটির। 


নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ফায়ার স্টেশনটি সুসজ্জিত করে রাখা হয়েছে। নতুন এ স্টেশনের রঙ দূর থেকেই ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও দৃষ্টি কেড়ে নেয় স্টেশন দিকে। গতি, সেবা ও ত্যাগ নিয়ে এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায় এ ফায়ার স্টেশনটি।


জুড়ী উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস বলেন, জুড়ীতে প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় পাশের উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আসতে আসতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। এখন আমাদের উপজেলায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন নির্মিত হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।


উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোনিয়া সুলতানা বলেন, এ উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে পাশ্ববর্তী দুই উপজেলার সাহায্য নিতে হয়। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে আসার আগেই অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি একটি  ফায়ার সার্ভিস স্টেশন যা বাস্তবে রূপ দিয়েছে সরকার। শিগগিরি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি উদ্বোধনের বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হবে।


মৌলভীবাজার জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. নিয়াজ উদ্দিনে সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জুড়ী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি গণপূর্ত বিভাগ মৌলভীবাজার বাস্তবায়ন করেছে। ভবনটি এখনো আমরা বুঝে পাইনি। তাছাড়া কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। এ স্টেশনটি উদ্বোধনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কাজ শেষ হলেই দ্রুত উদ্বোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।