আশুগঞ্জ ভৈরব নৌ-বন্দরে অদৃশ্য শক্তির প্রভাব

বিআইডব্লিউটিএ’র ৭ কোটি টাকার পন্টুন নষ্ট


Janobani

মো. রুবেল হোসেন

প্রকাশ: ১১:০৭ অপরাহ্ন, ১৫ই ডিসেম্বর ২০২২


বিআইডব্লিউটিএ’র ৭ কোটি টাকার পন্টুন নষ্ট
নারায়নগঞ্জ নদী-বন্দর

কুরুলিয়া এন্ডারসন খালের কাউতলী ঘাটে টিপি-৭২ ও শয়তানিয়া ঘাটে এসপি-১১৭ নামে দুটি পন্টুন যার মূল্য সাড়ে সাত কোটি টাকা যা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কতৃপক্ষের দায়হীনতায় অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিলে বিআইডব্লিউটিএ নারায়নগঞ্জ নদী-বন্দর থেকে তড়িঘড়ি করে এনে ইজারা দিতে না পেরে ফেলে রাখা হয়েছে দীর্ঘ দুই বছর ধরে।


কর্তৃপক্ষ বলছে একাধিকবার ইজারার জন্য দরপত্র আহবান করা হলেও ইজারা গ্রহিতাদের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ইজারা গ্রহিতারা বলছে ঘাটের নিরাপত্তা, ঘাট ব্যবহারে স্টিলের জেটি ও পন্টুনের স্পাড় না থাকা,বর্ষাকালে যাত্রীদের উঠানামার ব্যবস্থা না থাকায় ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করে ইজারা দরপত্র আহ্বান হয়েছে বলেই কেউ ইজারার দরপত্র জমা দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।


গত বছরের ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর দুই দিনের উচ্ছেদ অভিযানের কথা থাকলেও কোন এক অদৃশ্য শক্তির ও অসাধু কর্মকর্তাদের লালসার কারণে তা উচ্ছেদ পরিচালনা করা হয়নি। কেউ কেউ বলছে ক্ষমতাসীনদের অদৃশ্য শক্তির বলে বারবার অভিযানের উদ্যোগ নিলেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে পারছে না বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কতৃপক্ষ।


আশুগঞ্জ ভৈরব নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে কুরুলিয়া এন্ডারসন খালের কাউতলী ঘাটের পাড়ের জায়গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের। আশুগঞ্জ ভৈরব নৌ-বন্দর উপ-পরিচালক মো.রেজাউল করিম জনবাণীকে বলেন, কাউতলী ঘাটের জায়গা অধিকাংশই সড়ক ও জনপদ বিভাগের। সড়ক ও জনপদ বিভাগ এখনো ঘাটের জায়গাটি দখলমুক্ত করে দিতে পারেনি বলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন বন্দর কর্তৃপক্ষ ইজারাও দিতে পারছেনা।


যেহেতু ঘাটের উপরিভাগের জায়গাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের, তারা আমাদের বুঝিয়ে না দিলে আমরা কিছুই করতে পারছি না। আমি এ বন্দরে গত জুলাই মাসে বদলী হয়ে এসেছি। দুটি পন্টুন ইজারা দেয়ার জন্য জুলাই মাস থেকে এ পর্যন্ত তিন বার দরপত্র আহবান করেছি যা ইজারা গ্রহিতাদের কোন সাড়া পাইনি।


দরপত্র সাড়া না পাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন,শুষ্ক মৌসুমে কচুরিপানার প্রভাব থাকায় এপথে নৌ-চলাচল বিঘ্ন ঘটে যার ফলে শুষ্ক মৌসুমে নৌ-যান প্রায় বন্ধ থাকে। আমরা নিজেরাও কালেকশান করার চেষ্টা করেছি যা নৌ-মালিকগণ কালেকশান দিতে অনাগ্রহ দেখায়।


অন্যদিকে সড়ক ও জনপদ বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ ভৌমিক জনবাণীকে বলেন, আমরা আশুগঞ্জ ভৈরব নৌ-বন্দরকে গত বছরের জুন মাসের ৩ তারিখে লিখিত ভাবে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। চিঠিতে উল্লেখিত “ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে তিতাস নদীর শাখা এন্ডারসন খালের উত্তর পার্শ্বে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক একটি পন্টুন সংগ্রহ করা হয়েছে। নৌ-পথে যাত্রী সাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে পন্টুনে উঠার জন্য সড়ক নির্মাণের জায়গায় বর্তমানে কিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এই অবৈধ স্থাপনাসমূহ উচ্ছেদপূর্বক সড়কটি নির্মাণ করলে জনসাধারণের দূর্ভোগ লাঘব হবে”


তিনি আরো বলেন, তারা যেনো নিজ দায়িত্বে অবৈধ স্থাপনা দখলমুক্ত করে বন্দরটি ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে। তারা এখনো জায়গাটি দখলমুক্ত করে নিতে পারেনি। তবে সাতদিনের নোটিশ দিয়েছি জায়গাটি দখলমুক্ত করার জন্য। এখনো দখলকারীরা জায়গাটি দখল মুক্ত করেনি। আমরা অচিরেই জেলা প্রশাসকের অনুমতি পেলেই অবৈধ দখল উচ্ছেদের জন্য অভিযান পরিচালনা করবো।