শ্রীমঙ্গলে বীজ তলায় নষ্ট হয়ে ৪শ কেয়ার জমি অনাবাদি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, ২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩


শ্রীমঙ্গলে বীজ তলায় নষ্ট হয়ে ৪শ কেয়ার জমি অনাবাদি
অনাবাদি জমি

চলতি বোরো মৌসুমে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পানির জন্য বীজ তলায় নষ্ট হয়ে ৪শ কেয়ার জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। এতে করে উপজেলার আশীদ্রোন, খোশবাস, দত্তগ্রাম গ্রামের প্রায় একশ জন কৃষক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এনিয়ে কৃষকরা শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি  কর্মকর্তা ও আশীদ্রোন ইউ‘পি চেয়ারম্যান বরাবরে একটি অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন। 


সরেজমিনে কৃষকরা বলেন, ফটকী আশীদ্রোন সেচ প্রকল্প নামে পরিচালনা কমিটি চলতি বোরো মৌসুমে পানি দেওয়ার কথা ছিল। প্রকল্প পরিচালনা কমিটির ইকবাল মিয়া, রুপ মিয়া ও রুবেল মিয়ার কথামত কৃষকরা অগ্রহায়ন মাসের শেষদিকে বীজ বপন করেন। পৌষ মাসের মধ্যবর্তী সময়ে জমিতে হাল চাষ করার জন্য পানি দেওয়ার কথা। এখন চারার বয়স প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেছে। চারার বয়স বেশি হওয়ায় জমিতে লাগানোর অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ধানের চারা শুখিয়ে হলুদ হয়ে বীজতলায় নষ্ট হচ্ছে। এসময় বীজ তলার পাশে অবস্থান করা কৃষকদের মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। কৃষকের আর্তনাদ দেখে মনে হয়েছে এ যেন কৃষকের বুকের কান্না চাপা দিয়েছে।


আশীদ্রোন গ্রামের কৃষক মো. মইনুল ইসলাম বাবু বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে পানি কমিটি আমার বাড়ীতে তিনদিন আসিয়া মিটিং করে। আমাদের তারা বলেছে বোরো ধান রোপনের জন্য পানি দেবে। আমরা বীজ বপন করতাম। আমি চার মন ধানের বীজ বপন করি। এখন চারার বয়স দুই মাসেরমত এখন আর চারা রোপন করা যাবে না। এখন আমাদেরকে তারা আমাদের পানি দিচ্ছি।

 

খোশবাস গ্রামের কৃষক রোমন মিয়া বলেন, চার কেয়ার বোরো আবাদে জন্য আমি এক মন ধানের বীজ বপন করি। চার কেয়ার বোরো আবাদে তাদেরকে টাকা দিয়েছি। তারা আমাদের আজ কাল বলে এখন চারা বয়স দুই মাস। জমিতে ধানের চারা লাগানো যাবেনা। তারা আমাদের ক্ষতি কেন করলো?


একই গ্রামের কৃষক ফুরুক বলেন, আমি এক মন ধানের বীজ কিনে আনছি ৩ হাজার ২শ টাকা দিয়ে। জমির গালা কাটানো ২ হাজার টাকা মোট ৫হাজার ২শ টাকা খরচ করে ধানের চারা জমিতে লাগাতে পারিনি। চারার বয়স বেশি হওয়ায় এখন চারা হলুদ হয়ে মরে যাচ্ছে।


ফটকী আশীদ্রোন সেচ প্রকল্প পরিচালনা কমিটি অভিযুক্ত ইকবাল মিয়া মুঠোফোনে বলেন, আমরা মিটিংয়ের পর থেকে পানি দিয়ে যাচ্ছি। যারা অভিযোগ দিয়েছে তারা পানি জন্য একদিনেও আমাদের বলে নাই। আমরা মানুষের সেবা করার জন্য পানি দিচ্ছি ব্যবসার জন্য নয়। 


উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মহিউদ্দিন জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় আমাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ডগেটিং করতেন ফাইল। আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। তাদের বিরোদ্ধে সরকারী বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবো।


শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, কৃষকদের খেতে পানির সমস্যা নিয়ে আমি অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের কৃষি অফিসের মাঠ কর্মী বিষয়টি দেখে এসেছেন। আগামী রোববার উপজেলায় কৃষক ও পানি প্রদানকারীদের ডেকেছি। দুইপক্ষকে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হবে। 


আরএক্স/