‘মিয়ানমারে রেখে আসা গ্রামের অস্তিত্ব দেখেনি রোহিঙ্গারা’


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন, ৬ই মে ২০২৩


‘মিয়ানমারে রেখে আসা গ্রামের অস্তিত্ব দেখেনি রোহিঙ্গারা’
প্রতিনিধি দল

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু থেকে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে পালিয়ে আসার সময় যে গ্রাম রেখে এসেছিলেন তার কোন অস্তিত্ব দেখেননি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা। ওখানে এখন সারিবদ্ধ ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে।


প্রত্যাবাসনের পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখতে যাওয়া বাংলাদেশে বসবাসরত ২০ রোহিঙ্গা সহ ২৭ প্রতিনিধিদল শুক্রবার বিকাল পৌন ৫ টায় মিয়ানমার থেকে আসার পর এমন তথ্য জানিয়েছেন সফরে থাকা রোহিঙ্গা আবু সুফিয়ান।


আবু সুফিয়ান জানান, মংডু শহরের আশে-পাশে কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখেছেন তারা। ওখানে গ্রামের কোন অস্তিত্ব ছিল না। সব কিছু পাল্টে গেছে। তবে সারি সারি ক্যাম্প তৈরি করেছে। এসব ক্যাম্পেই রোহিঙ্গাদের নিয়ে রাখার পরিকল্পনা করছেন মিয়ানমার।


সফরে থাকা মোহাম্মদ সেলিম নামের অপর এক রোহিঙ্গা জানান, মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের সাথে তিনি নিজেই কথা বলেছেন। প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার দাবি জানালেও তাকে জানানো হয়েছে আপাততে নাগরিকত্ব দেয়া হবে না। এনভিসি কার্ডে তাদের ক্যাম্পে থাকতে হবে।


মিয়ানমারের এমন শর্তে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনে আগ্রহী হবে বলে মনে করছেন না সেলিম।


শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজারের টেকনাফের জালিয়াপাড়া ঘাট থেকে মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে যাত্রা দেন। বেলা ১১ টার দিকে তারা মংডু শহরের পৌঁছেন। উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পের ২০ রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাদের সাথে নিয়ে যারা রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ৭ কর্মকর্তা এই সফরে যান। রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী ছিলেন।


কক্সবাজারস্থ শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, মিয়ানমারের মংডু শহরের আশে-পাশে পরিদর্শনকালে পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি দেখা গেছে। ওখানে স্বাধীনভাবে চলা ফেরা করা, ব্যবসা করা মানুষের ৮০ শতাংশই দেখা গেছে রোহিঙ্গারা। ওখানে প্রত্যাবাসনের অনুক‚ল পরিস্থিতি দেখা গেছে।


আরআরআরসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, এরপর মিয়ানমারের একটি দল দ্রæত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সফরে আসবেন। ওখানে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলাপ আলোচনা হবে।


আরআরআরসি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হওয়ার পর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে প্রত্যাবাসনের জন্য ৮ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকায়  দিয়েছিল। সে তালিকা যাছাই-বাছাই করে মাত্র ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা চুড়ান্ত করে তা বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠিয়েছিল মিয়ানমার।

 

এর আগে ২০১৮ সালের ১৫ই নভেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি আর বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি। এরপর ২০১৯ সালে অগাস্টে চীনের তরফ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর আরেকটি উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু নাগরিকত্বের বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যেতে চায়নি। এখন আবার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীনের তরফ থেকে এই তৃতীয় দফার উদ্যোগ নেয়া হলো।


আরএক্স/