১০-২০তম গ্রেডভুক্ত সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধিসহ যৌক্তিক দাবিতে সংবাদ সম্মেলন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৩৮ অপরাহ্ন, ২৫শে মে ২০২৩


১০-২০তম গ্রেডভুক্ত সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধিসহ যৌক্তিক দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী জাতীয় পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

প্রজাতন্ত্রের ১০-২০ তম গ্রেডভূক্ত কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধিসহ যৌক্তিক দাবী আদায়ের লক্ষ্যে করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী জাতীয় পরিষদ।  


বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বিকাল ৩টায়  জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসনে চৌধুরী হলে  এ সংবাদ সম্মেলন  আয়োজন করা হয়।


সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য লাগামহীন বৃদ্ধিতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা। এমনি পরিস্থিতিতে আয়-ব্যয়ের এ অসংগতি, প্রজাতন্ত্রের ১০-২০ তম গ্রেডভূক্ত কর্মচারীদের আর্থিক দূর্দশা লাঘবে বেতন বৃদ্ধিসহ যাবতীয় বৈষম্য দুরীকরণে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে আপনাদের সংবাদ মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহায়তায় এগিয়ে আসবেন এই প্রত্যাশা রাখছি। আপনাদের প্রচেষ্টায় ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটে কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধিতে পর্যাপ্ত আর্থিক সংস্থান থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস।


সংবাদ সম্মেলনে সরকারের নিকট বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী জাতীয় পরিষদ  ৭টি দাবি তুলে ধরেছে। দাবি গুলো হলো-  ১. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত ১৯৭৩ সালের জাতীয় বেতন স্কেলের অনুরূপ ১০ টি গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণ পূর্বক ০৬ (ছয়) সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের দৈনন্দিন ব্যয় বিবেচনায় সর্বনিম্ন মূল বেতন ২৫,০০০/- টাকা নির্ধারণ এবং প্রতিটি গ্রেডের মধ্যবর্তী ব্যবধান যৌক্তিক করতে হবে এবং এ উপলক্ষ্যে নবম জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করতে হবে। নবম পে-কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত ১০ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদে কে কমপক্ষে ৫০% মহার্ঘভাতা প্রদান করতে হবে। শতভাগ পেনশন প্রদান, স্বেচ্ছায় অবসরের চাকরির বয়সসীমা ২০ বছর নির্ধারণ এবং আনুতোষিক প্রতি ০১ (এক) টাকায় ৩০০/- (তিনশত) টাকা নির্ধারণ করতে হবে;


২. সচিবালয় এবং সচিবালয়ের বাহিরে কর্মরত সকল পর্যায়ের কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তন ও বেতন স্কেল  এক ও অভিন্ন করতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদেরকে প্রথম শ্রেণী ও সহকারী শিক্ষকদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণী গেজেটেড মর্যাদা প্রদান করতে হবে। ব্লক পদ প্রথা প্রত্যাহার পূর্বক প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর জন্য এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি অবিলম্বে প্রণয়ন করতে হবে এবং পদোন্নতি যোগ্য পদ শুণ্য না থাকলেও নির্ধারিত সময়ের পর উচ্চতর পদের বেতন স্কেল প্রদান করতে হবে একই সাথে কার্যভিত্তিক/মাষ্টাররোল/ভাউচারে নিয়োজিত কর্মচারীদের নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে আনয়ন এবং আউট সোর্সিস প্রথা বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে;


আরো পড়ুন : সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমরা নতুন ভিসানীতি করেছি: পিটার হাস



৩. বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির হার প্রচলিত ৫% এর পরিবর্তে ২০% এ উন্নীতকরণ, সকল পদে টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড, টেকনিক্যাল কর্মচারীদের জন্য ০২ টি বিশেষ ইনক্রিমেন্ট পুনর্বহাল, এলাকা ভেদে ৮০% থেকে ১০০% হারে বাড়িভাড়া ভাতা, বিনা ব্যয়ে চাকুরীরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের সকল প্রকার চিকিৎসা সুবিধা প্রদান, যাতায়াত ভাতা, টিফিন ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কর্মে নিয়োজিত কর্মচারীদেরকে ঝুঁকিভাতা প্রদান করতে হবে। ১০-২০ তম গ্রেড ভূক্ত কর্মচারীদেরকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের উৎসব ভাতা এক মাসের পরিবর্তে দুই মাসের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হবে; 


৪.  ১-৬ গ্রেডের কর্মকর্তাদের ১০% বার্ষিক মূল্য হ্রাস পদ্ধতিতে বিনা সুদে গাড়ী ঋণ সুবিধার অনুরূপ ১০-২০ গ্রেডভূক্ত কর্মচারীদের ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা বিনা সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ সুবিধা প্রদান করতে হবে এবং কর্মকর্তাদের গাড়ী রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য ব্যয় বাবদ মাসিক ৫০ হাজার টাকার অনুরূপ ১০-২০ গ্রেডভূক্ত কর্মচারীদেরকে কর্মচারীদের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, সামাজিক ও অন্যান্য ব্যয়বাবদ প্রতি মাসে বেতনের সাথে ১০ হাজার টাকা প্রদান করতে হবে এবং রাজউকের প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে কর্মচারীদের সংখ্যার আনুপাতিক হারে কোটা সংরক্ষণ করতে হবে;


৫. রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত কর্মচারীদের চাকুরী গণনা, অযাচিত ২০% পেনশন কর্তনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে, বিভিন্ন সময়ে উত্থাপিত দাবী, মামলার রায়সহ এতদ্সংক্রান্ত বিষয়সমূহ দ্রুত সমাধানে কমিশন গঠন করতে হবে;


আরো পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্র তো আমাদের শাস্তি দিতে পারবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী


৬. কল্যাণ তহবিলের অর্থ লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করতঃ কর্মচারীগণের সন্তানদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে, অফিসার্স ক্লাব, বিএমএ, কেআইবি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন, ডিপ্লোম ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন এর মতো চাকুরীরত ও অবসরপ্রাপ্ত ১০-২০ গ্রেডভূক্ত কর্মচারীদের জন্য রাজধানীতে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাষ্ট কমপ্লেক্স নির্মাণ করতে হবে;


৭. মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে স্বাক্ষাৎ ও সরকারি চাকরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) ও অবসরের বয়সসীমা ৬২ (বাষট্টি) বছর এবং নবম পে-স্কেল এবং স্কেল বাস্তবায়ন পর্যালোচনা কমিটিতে কর্মচারী প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।


জেবি/এসবি