ফুলবাড়িয়ায় সরব আ.লীগ, নিরব বিএনপি, কৌশলে এগোচ্ছে জামায়াত
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:৪৮ অপরাহ্ন, ১২ই জুলাই ২০২৩
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৫১ ময়মনসিংহ-৬ ফুলবাড়িয়া আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠ গুছাচ্ছেন। লালচিনি ও হলুদের জন্য খ্যাত এলাকাটিতে ভোটারদের মাঝেও চলছে নানা আলোচনা। মাঠে অধিক সরব থেকে ব্যাপকভাবে কাজ করছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা। সেই তুলনায় অনেকটাই নিরব বিএনপি। ভোটের মাঠে বরাবরই শক্ত অবস্থানে থাকা জামায়াত এগোচ্ছে কৌশলে, মহাজোটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ঝোপ বুঝে কোপ মারতে চায় জাতীয় পার্টি ও জাসদ।
ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভায় নিয়ে জাতীয় সংসদের ১৫১ ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসন গঠিত। জেলার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ আসনে মোট ভোটার ৩৮৪৬০০জন। তার মধ্যে পুরুষ ১৯৩৫৫৮, মহিলা ১৯১০৪০, হিজরা ২জন রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামীলীগের প্রবীন রাজনীতিবিদ বর্তমান এমপি এড. মোসলেম উদ্দিন নৌকা প্রতীক নিয়ে এ আসন থেকে ৬বার এমপি নির্বাচিত হয়েছে। এবারও তিনি ভোটের লড়াইয়ে অনুসারীদের সঙ্গে করে এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বেশির ভাগ সময়ই নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন উদ্বোধন, বিভিন্ন ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করছেন।
এছাড়াও ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নানা প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী মাঠ গোছাতে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক নেতা মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল কলেজ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি, পুরুষ নারী কর্মী সমর্থকদের নিয়ে উঠান বৈঠক, তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
দ্বাদশ নির্বাচনে নৌকার জোড়ালো দাবীদার বর্তমান এমপি পুত্র উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এডভোকেট ইমদাদুল হক সেলিম। তিনি উপজেলার ইউনিয়ন থেকে শুরু করে তৃণমূলের ওয়ার্ডগুলোতে আওয়ামীলীগের দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সভা সমাবেশ করে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। মূল দলের পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের দু' একজন ছাড়া নেতাকর্মীদের সবাই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিয়ে তার সঙ্গে রয়েছেন বলে তিনি জানান।
এ ছাড়া আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যান্যরা হলেন: উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এড. মোসলেম উদ্দিন এমপি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এড. আব্দুর রাজ্জাক,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাংসদ পুত্র আলহাজ্ব এড. ইমদাদুল হক সেলিম, জেলা আওয়ামীলীগের নেতা এমএ কুদ্দুস, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. হারুন অর রশীদ হারুন, সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর আব্দুল মান্নান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভিপি এড. কেবিএম আমিনুল ইসলাম খাইরুল, মহানগর আওয়ামী যুবলীগ (উত্তর) আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এড. গোলাম ছারোয়ার খান জাকির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ গোলাম মোস্তফা তপন তালুকদার, সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী সেলিমা বেগম সালমা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মালেক সরকার।
দলীয় মনোনয়ন লাভের প্রত্যাশায় নানা কর্মকান্ডের পাশাপাশি এলাকায় দোয়া চেয়ে প্যানা, পোস্টার, বিলবোর্ড, ফেস্টুন দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাচ্ছেন এসব সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
আওয়ামীলীগের মনোনয়ন কে পাবেন এমন বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোসলেম উদ্দিন বলেন, আমি এমপি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে অবদান রেখেছি। মনোনয়নের বিষয় একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বলতে পারবেন। তবে এবারও নৌকার বিজয় হবে।
উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এড. ইমদাদুল হক সেলিম বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমি আমাদের দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে তৃণমূল পর্যায়ে সু-সংগঠিত করেছি। আমরা উপজেলা আওয়ামীলীগ প্রস্তুত নির্বাচন নিয়ে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে নৌকার মনোনয়ন দিবেন আমরা তাকে বিজয়ীই করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। যদি আওয়ামী লীগ প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা ও নীতিনির্ধারকগণ, আমাকে নৌকা প্রতীক মনোনীত করেন, তাহলে এই জনপদের তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকের নিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে এই আসনটি উপহার দিয়ে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উন্নয়ন সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা এই আসনে যাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করবেন ফুলবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ তার পক্ষে কাজ করবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ উপজেলায় তৃণমূল পর্যায়ে তথা আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মীদের সাথে তার যোগাযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, প্রত্যাশা নিয়ে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি বাকিটা নেত্রীর ওপর নির্ভর। তবে প্রার্থী যেই হোক নৌকাকে বিজয়ী করাই আমাদের মূল লক্ষ থাকবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিকল্প নেই।
এড. কেবিএম আমিনুল ইসলাম খাইরুল ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু অধ্যাবধি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে মাঠে কাজ করছেন জানিয়ে বলেন, স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনসহ দলের যেকোন দুঃসময়ে সব ধরণের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় থেকে নিবেদিত প্রাণ কর্মী হিসেবে করে চলেছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচনী বৈতরণী পারি দেয়া সহজ হবে। তথাকথিত চারদলীয় জোট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সক্রিয় অংশগ্রহণ করে ৫ বার কারবরণ করেছি।
এড. জাকির বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।
এদিকে মাঠ পর্যায়ের সাধারণ নেতাকর্মীদের রয়েছে নানামুখি প্রত্যাশা। পুটিজানা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক বলেন, আওয়ামীলীগের তৃণমূলের জনপ্রিয় ব্যাক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হলে এ আসন ধরে রাখা সহজ হবে।
আওয়ামী লীগ অফিসের কেয়ারটেকার সুরুজ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্যই তৃণমূল পর্যায়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করেই মনোনয়ন দিবে। সেক্ষেত্রে নৌকাকে কেউ আটকাতে পারবে না।
আশরাফুল ইসলাম আসাদ বলেন, বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগ যেভাবে মাঠে-ঘাটে কাজ করছে নৌকার জয় হবেই। এই বিজয় ঠেকাতে পারবে না।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি থেকেও মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক নেতা রয়েছেন। ফুলবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির একটি অংশ তথা ১/১১ বিষয়ে মাঠে কাজ করছে। ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সরকারের প্রেতাত্মারা আরেকটি তৃতীয় শক্তি আশা করছে। বেগম খালেদা জিয়া তথা তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানকে মাঠ পর্যায়ে তাদের শক্তিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে। দুঃসময়ে বিএনপি ছেড়ে কিং পার্টি খ্যাত প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল-পিডিপি’র মত দলে যোগ দিয়ে বিএনপির ক্ষতি করা গ্রুপ এখন আবার নতুন করে বিএনপিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে ত্যাগী বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ রয়েছে। নানা কারণেই এখনো পুরোপুরি মাঠ গোছাতে পারেনি বিএনপি। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি’র দলীয় রাজনীতিতে এখানে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। দলের এ নাজুক পরিস্থিতি থেকে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এগোতে পারছে না ৯ মাস আগে গঠন হওয়া উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি।
গত ১৫ আগষ্ট ময়মনসিংহ (দক্ষিন) জেলা বিএনপি’র আহবায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন নবগঠিত উপজেলা আহবায়ক কমিটিকে এক নির্দেশনায় লিখিত ভাবে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপজেলার সকল ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠনের নির্দেশ দিলেও বিএনপি’র উপজেলা আহবায়ক কমিটি গঠনে ব্যর্থ হয় বলে তৃণমূল বিএনপি’র ত্যাগী নেতাদের অভিযোগ।
ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের তত্তবধায়ক সরকারের আমলে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান গ্রেফতার হলে এর প্রতিবাদ ও নেতাদের মুক্তির দাবীতে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নেতা, বর্তমানে কেন্দ্রীয় যুবদলের প্রচার সম্পাদক আব্দুল করিম সরকার দুঃসাহসিক নেতৃত্ব দিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তিনি তার কর্মের কথা উল্লেখ করে সার্বিক ত্যাগের বিবেচনায় এবার দলীয় মনোনয়নে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের প্রত্যাশায় কাজ করে যাচ্ছেন।
আরও জানা যায় যে,দলীয় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, এড.. আজিজুর রহমান ফুলবাড়িয়া উপজেলা বি এন পির দুঃসময় নেতাকর্মীদের পাশে থেকে উপজেলা পরিষদ পরিচালনা করেছেন পাঁচ বছর। পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে তিনি উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে চষে বেরিয়েছেন নেতাকমীদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত থেকে দলমত নির্বিশেষে সাধারণ এবং দলীয় নেতাকর্মীদের দিয়েছেন আইনি সহযোগিতা করেছেন । আওয়ামী দুঃশাসনের আমলে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে গায়েবী মামলায় জেল খেটেছেন তিনি। তিনি বিভিন্ন দিবস ও আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে পাশে থাকেন।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. শাহজাহান সিরাজ সাজু বলেন, পিডিপি ফারুক আহবায়ক হওয়ার পর তার একঘেয়েমি মনোভাব স্বেচ্ছাচারীতার কারণে এবং ঢাকায় অবস্থান করার কারণে দলীয় কর্মকান্ড দেখে আহবায়ক কমিটির ৬ জন যুগ্ম আহবায়ক তার কাছ থেকে সরে গেছেন। অপর দিকে উপজেলা বি এন পির যুগ্ম আহবায়ক, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডঃ আজিজুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আশিকুল হকসহ কমিটির ৬ জন যুগ্ম আহবায়ককে তার দলে ভেড়াতে পারেননি আহবায়ক ফারুক। আহবায়কের প্রতি ক্ষুব্ধ যুগ্ম আহবায়ক এডঃ আজিজুর রহমান ও উপজেলা বিএনপির সন্মানিত সদস্য, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জননেতা আব্দুল করিম সরকার বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচী বিএনপি’র উপজেলা আহবায়ক ছাড়াই পৃথক ভাবে জাতীয় ও দলীয় কর্মসূচিগুলো পালন করে যাচ্ছেন।
আব্দুল করিম সরকারের নেতৃত্বে ফুলবাড়িয়া উপজেলার ইউনিয়ন ওয়ার্ডের বিএনপি তৃণমূল পর্যায়ে তথা ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মৎস্য জীবী দল, কৃষক দল ওয়ার্ড পর্যায়ে শক্তিশালী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বিভিন্ন দিবসে নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে পাশে থাকেন। তিনি তৃণমূল তথা আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে কাজ করছেন।
সব মিলে বিএনপি'র মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন: যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক, উপজেলার বিএনপির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টারদা সূর্যসেন হলের সাবেক সাধারন সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল করিম সরকার, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আকতারুল আলম ফারুক, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক, উপজেলা পরিষদের সাবেক সফল চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সদস্য এডঃ আজিজুর রহমান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা মোঃ আশিকুল হক আশিক, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও জেলা বিএনপির সদস্য এড: রেজাউল করিম চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সদস্য প্রবাসী ডক্টর মোঃ খলিলুর রহমান আকন্দ।
এড. আজিজুর রহমান তিনি উপজেলায় নেতা-কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। জেল-জুলুম মামলা-হামলা মাথায় নিয়ে রাজপথে ছিলেন এবং আছেন।
আশিকুল হক স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন এবং বর্তমান সরকারের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলনে জেল জুলুম মামলা হামলাসহ রাজপথে থাকেন। ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তিনি মনোনয়ন পেলে বিজয় সহজ বলে তিনি দাবি করেন।
আশিক বলেন, আমাকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দিলে বেগম খালেদা জিয়া তথা তারেক রহমানকে আসনটি উপহার দিব।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে যুবককে মিথ্যা বিয়ের ফাঁদে ফেলে কনেসহ কারাগারে ৩
উপজেলা বিএনপির সদস্য প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ডক্টর মো. খলিলুর রহমান আকন্দ তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় এলাকায় পোস্টার প্যানা দিয়ে উপজেলাবাসীকে বেগম খালেদা জিয়ার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। তিনি একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়। প্রবাসী এই নেতা বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি নিজ এলাকার তৃণমূলে নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে নানাভাবে পাশে থাকছেন। দ্বাদশ নির্বাচনে দল যদি নির্বাচনে আসে তবে তিনি ধানের শীষের জোড়ালো দাবীদার হিসেবে কাজ করছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ডক্টর মো. খলিলুর রহমান বলেন,আমাকে দল মনোনয়ন দিলে বিজয়ী হব ইনশাআল্লাহ।
মাঠের কর্মী ও বিএনপির ত্যাগী নেতাদেরও রয়েছে নানা প্রত্যাশা। ৯০এর গণঅভ্যুত্থানের সময় স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা এড. মাহবুবুর রশীদ তামান্না বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে গেলে দলে ঐক্যের বিকল্প নেই। উপজেলা বিএনপি'র নেতাকর্মীদের নামে ২০১৪ সাল থেকে যতগুলো গায়েবি মিথ্যা মামলা হয়েছে ৬০ভাগ মামলা আমি পরিচালনা করতেছি। দলের সকল কর্মসূচি সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকা সত্বেও আমাকে দলের কোন সদস্য পদও দেওয়া হয়নি। নেতার আজ্ঞাবহ হলে কমিটিতে স্থান আর বিএনপির কর্মী হলে কিছুই পাবে না। এই অপসংস্কৃতি পরিবর্তন হওয়া আবশ্যক। সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে দলে সম্পৃক্ততা না করলে দল সমৃদ্ধ হবে না।
বিএনপির জোরালো ভোটার নুরুল ইসলাম নুরেল বলেন, যারা দলের নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে পাশে থাকেন, তৃণমূল পর্যায়ে খোঁজ-খবর নেন তাদের যেন ধানের শীষের মনোনয়ন দেয়া হয়। কোন দুই নম্বরি টাকার মাধ্যমে যেন ফুলবাড়িয়া উপজেলার ধানের শীর্ষের মনোনয়ন না দেয়া হয়।
বিএনপির কর্মী প্রভাষক এনামুল হক বলেন, বিএনপিতে যারা প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল( পিডিপি)করেছে তাদেরকে বাতিল করতে হবে। উপজেলার আছিম বাজারের ধান মহলে পিডিপির পার্টির অফিস বানিয়ে ছিল তাদেরকে যেন মনোনয়ন না দেওয়া হয়। তারা আরেকটি ১/১১ সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে কৌশলে নির্বাচনমুখি রাজনৈতি নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে নেতাকর্মীরা। বরাবরই এখানে জামায়াতের একটা নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংক রয়েছে। ঢাকা বিভাগ তথা ময়মনসিংহ বিভাগে জামায়াতের ঘাটি হিসেবেই পরিচিত এই আসনটি। এ আসনটির প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের জামাতের শক্তিশালী কমিটি রয়েছে। জোটবন্ধ বা একক যেভাবেই হোক জামায়াত এই আসনটি নিজেদের দলের জন্য ধরে রাখতে প্রার্থী দিয়ে জোড়ালো অবস্থান নিবে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধে মসিকের স্কুল ভিত্তিক সচেতনতা ক্যাম্পেইন
জামায়াতে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক একক মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেন: জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ কামরুল হাসান মিলন। তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে গণসংযোগ, মিটিং অব্যাহত রেখেছেন।
অধ্যক্ষ মুহাম্মদ কামরুল হাসান মিলন বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এ আসনটির প্রতিটি ওয়ার্ডের দলীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলীয় প্রোগ্রাম অব্যাহত আছে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষায় আছি।
আওয়ামীলীগের সাথে জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টি এ আসনটি তাদের নিজেদের জন্য প্রত্যাশা করে। সে লক্ষে তারা কাজও করে যাচ্ছে। এখানে রওশন এরশাদ ও জিএম কাদের দুই গ্রুপে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে।
রওশন এরশাদের গ্রুপের মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেন: এরশাদের সাবেক উপদেষ্টা ও উপজেলা জাপার আহবায়ক ডা. কে আর ইসলাম।
জাতীয় পার্টির অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে নিয়মিত কাজ করছেন, কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফিজুর রহমান বাবুল। তিনি উপজেলায় অসহায় হতদরিদ্র মানুষের কল্যানে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকায় বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ-মাদ্রাসা, গির্জা ও মন্দিরে বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছেন। বিভিন্ন ক্লাব সমিতি খেলাধুলা,সামাজিক সংগঠন আচার অনুষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। উপজেলায় অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদেরকে দীর্ঘদিন যাবৎ সার্বিক সহায়তা করেছেন।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে ভূমি-সহকারির ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ভাইরাল
তিনি ময়মনসিংহ বিভাগ সমিতি ঢাকার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতি ঢাকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বর্তমানে সহ-সভাপতি। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএসএস(অনার্স), এমএসএস, ইতিহাস এ এম এ, এলএল বি (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পিএইচডি(ফেলো)ইন্ডিয়া। এলাকায় তার আলাদা জনপ্রিয়তা রয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফিজুর রহমান বাবুল বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের মহোদয় যদি আমাকে লাঙ্গল প্রতীক মনোনয়ন দেন তাহলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।
মহাজোটের সুযোগে জাসদ (ইনু) এ আসনে ঝোপ বুঝে কোপ মারতে চান। এখানে জেলার মাঝে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ তৃণমূল পর্যায়ে অনেকটাই শক্তিশালী। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের একক মনোনয়ন প্রত্যাশী ময়মনসিংহ মহানগর জাসদের সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টু। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনয়ন প্রত্যাশী মাওলানা মামুনুর রশীদ সিদ্দিকী।
জেবি/এসবি