খাদিজার জামিন শুনানি মুলতবিতে ৩১ সংগঠনের ক্ষোভ
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:২৭ অপরাহ্ন, ২২শে জুলাই ২০২৩
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিন আদেশ ও শুনানি স্থগিতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়েছে প্রতিবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ।
শুক্রবার (২১ জুলাই) প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের পক্ষে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর প্রচার সম্পাদক কংকন নাগ প্রতিবাদ লিপিটি প্রকাশ করেন ।
৩১টি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করলাম যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা বিনাবিচারে প্রায় এক বছর সময়কাল কারাবন্দী থাকা অবস্থায় হাইকোর্ট কর্তৃক জামিন প্রদান করার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আবরো চেম্বার আদালত জামিনাদেশ স্থগিত করে এবং উক্ত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে খাদিজার আপলি শুনানি আপিল বিভাগ চার মাস মুলতবি করেছে। জনগণের স্বাধীন মত প্রকাশ সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। কিন্তু, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো একটি নিবর্তনমুলক আইনে একজন নারী শিক্ষার্থী দীর্ঘ সময় ধরে কারাবন্দী থাকার পর হাইকোর্টের জামিনাদেশ পুনরায় চেম্বার আদালত কর্তৃক স্থগিত করা এবং সেই স্থগিতাদেশ খাদিজা কর্তৃক প্রত্যাহারের আপিল শুনানি আপিল বিভাগ কর্তৃক চার মাস মুলতবি করার ফলে খাদিজাকে বিনা বিচারে আরো চার মাস কারাবন্দী থাকতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলেন, “আমরা মনে করি, এইরূপ আদেশ জনগণের ন্যায় বিচার পাবার পরিপন্থী। একজন শিক্ষার্থীর জীবনে যেখানে প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। সেখানে খাদিজার মত একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর বিনাবিচারে এক বছরের অধিক সময় আদালতের আদেশের ফলে কারাগারে বন্দী থাকতে দেখে দেশের কোটি কোটি জনগণের মত আমরাও হতবাক, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ।”
আরও পড়ুন: ঢাকা আলিয়া ছাত্রলীগের সভাপতি মুরাদ, সম্পাদক বরকত
বিবৃতিতে প্রতিবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ বলেন, “আমরা অবিলম্বে জনগণের স্বাধীন মতপ্রকাশের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার পরিপন্থী নির্যাতনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং উক্ত আইনে আটক খাদিজাসহ সকল বন্দীদের মুক্তি দাবি করছি।”
তারা বলেন, “সংবিধানের মৌল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে দেশের জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তথা বাকস্বাধীনতাকে খর্ব করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, গণমাধ্যম, শিক্ষক, ছাত্র, শিল্পীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে হয়রানি এবং বিরোধীমত দমনের অন্যতম হাতিয়ার বানানো হয়েছে এ আইনকে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে এ ধরনের নিবর্তনমূলক আইন কখনোই বলবৎ থাকতে পারে না বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এসব অগণতান্ত্রিক আইনকানুন এবং দমন-পীড়ন স্বাধীনতার ঘোষণা তথা সাম্য, সামাজিক ন্যায় বিচার ও মানবিক মর্যাদার পরিপন্থী বলেও প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।”
আরও পড়ুন: জবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বনানী থানায় মামলা
প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহ হলো- বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, গণসংস্কৃতি কেন্দ্র, সংহতি সংস্কৃতি সংসদ, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্র, বাংলাদেশ গণশিল্পী সংস্থা, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন, রাজু বিতর্ক অঙ্গণ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ভাগ্যকুল পাঠাগার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণ, প্রগতি লেখক সংঘ, গণসংস্কৃতি পরিষদ, স্বদেশ চিন্তা সঙ্ঘ, বাংলাদেশ থিয়েটার, তীরন্দাজ, রণেশ দাশগুপ্ত চলচ্চিত্র সংসদ, এই বাংলায়, ঢাকা ড্রামা, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ, বিবর্তন নাট্যগোষ্ঠী-সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ মূকাভিনয় ফেডারেশন, ধাবমান সাহিত্য আন্দোলন, থিয়েটার'৫২, সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংঘ, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিষদ, শহীদ আসাদ পরিষদ, মাদল, বটতলা- এ পারফরমেন্স স্পেস, সমাজ চিন্তা ফোরাম, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
জেবি/এসবি