মহান বিজয়ের মাস শুরু
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন, ১লা ডিসেম্বর ২০২৩
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে স্মরণীয় মাস। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি নিয়ে স্বাধিকারের জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা পূর্ণতা পায় ১৯৭১ সালের ৯ মাসব্যপী মুক্তিযুদ্ধে। বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে জানান দেয় কাক্সিক্ষত স্বাধীন-সার্বভৌম এক খ- জমি। পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত হয় বাঙালি। পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে বাঙালির এই যুদ্ধ পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এই যুদ্ধ তৎকালীন বিশ্বের দুই পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। যৌথবাহিনী ঢাকা অবরোধ করে পাকবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের আত্মমসমর্পণের আহ্বান জানাচ্ছিলেন। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বারবার যোগাযোগ করছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সাথে।
পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছিল চীনকে এই যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে। এটা বুঝতে পেরে সোভিয়েত ইউনিয়ন চীন সীমান্তে সেনা মোতায়েন শুরু করে। তখন চীনের এত শক্তি ছিল না যে, তাদের আটকাবে। তাই চীন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া থেকে নিজেকে বিরত রাখে। ১৪ ডিসেম্বরেই নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনীর মরণঘণ্টা বেজে গেছে। ঢাকা থেকে রাওয়ালপিন্ডিতে পাঠানো বার্তাগুলোয় ফুটে উঠছিল চরম হতাশার সুর। সকাল ১০টায় প্রেরিত এক বার্তায় বলা হয়, ‘আমরা আশ্বাসের ওপর বেঁচে আছি। কিছু ঘটবে কি-না অনুগ্রহ করে জানান, যা ঘটার সেটা অতিদ্রুত হতে হবে।’ আরেক বার্তায় বলা হয়, ‘আমাদের কোনো মিসাইল নেই, আমরা কিভাবে গোলা নিক্ষেপ করব? কোনো বিমানবাহিনী নেই। বিমান হামলা হয়ে উঠেছে দুশ্চিন্তার কারণ।’
১৫ ডিসেম্বর দিনটি শুরু হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানে সরকারবিহীন পরিস্থিতিতে এবং বাতাসে পাওয়া যাচ্ছিল আত্মসমর্পণের আভাস। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। পৃথিবীর বুকে জন্ম নেই নতুন একটি দেশ বাংলাদেশ।
আরএক্স/