পঞ্চগড়ে হাড়কাঁপানো শীতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৫০ অপরাহ্ন, ১৩ই জানুয়ারী ২০২৪


পঞ্চগড়ে হাড়কাঁপানো শীতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা
ছবি: জনবাণী

শীতে থরে থরে কাঁপছে পঞ্চগড়ের মানুষ। এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা আবারো কমেছে। সারাদিন মেঘে ঢাকা থাকছে আকাশ পাশাপাশি বৃষ্টি মতো ঝরছে কুয়াশা। এদিকে শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বেড়েছে। 


পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত ৬২ জন শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে।


আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে মেঘের আড়ালে সূর্য, জনজীবন দুর্ভোগে


তেতুঁলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তর জনায়, শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি নিশ্চিত করেন দপ্তরটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ তবে নতুন বছরের শুরুর পরে এটি তৃতীয় সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা বলে জানা যায়।


গত ৩ জানুয়ারি তেতুঁলিয়া আবহাওয়া দপ্তর সর্বনিম্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করেছেন ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর পরে ৭ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রের্কড করা হয় ৮ দশমিক ১ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৫দিন ধরে এ অঞ্চলে চলছে মৃদৃ ও মাঝারি শৈত্য প্রবাহ। মেঘে ঢাকা থাকছে আকাশ ফলে শীতে তীব্রতা বাড়ছে।শুক্ররবার সকাবেলাও দেখা গেছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতে। 


আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য মতে, এই ৩ , ৭ ও ১৩ জানুয়ারি এই তিন দিন এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল এজেলাটিতে। শনিবার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় শিশু ডায়রিয়া মা বাবারা তাদের সন্তানদের নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেডে জায়গা না পেয়ে বাইরের বারান্দায় মেঝেতে কাপড় বিছিয়ে চিকিৎসা গ্রহন করছেন। ভর্তি হওয়া তিন বছরের শিশু মাহমুদুল আলমের মা জানান তিনি তার সন্তানকে সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার বাবার নাম সামসুল আলম গ্রাম বলেয়াপড়া পঞ্চগড়। বৃহষ্পতিবার ওই শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।


এক মাসের শিশু মেহেদেী হাসানকে নিয়ে আসেন বাবা সৈয়দ আলী ও মা নূরী বেগম। বাড়ি জেলা সদরে। দুই বছরের শিশু মিজানুরর রহমানকে নিয়ে আসেন মা অফিলা বেগম ও বাবা আব্দুল মতিন। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার বোর্ড বাজার। শিশুটি শুক্ররবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।ওই দিন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এসব আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়ার পাশাপাশি বমি ও আছে।


এবিষয়ে পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক এসএম রাজিউর রহমান রাজু বলেন‘সাধারনত শীতকালে ফেব্রয়ারির দিকে শিশুদের মাঝে ডায়রিয়া দেখা দেয়। তবে এবারে তাড়াতাড়ি এ ডায়রিয়া দেখা গেছে। তবে ভয় নেই ‘চিকিৎসার তিন চারদিনের মধ্যে ডায়রিয়া নিরাময় হবে। তিনি বলেন এ শীতে শিশুদের ঘরের বাইরে আনা যাবেনা। তাদেরএক দম বাতাস লাগানো যাবে না। এ পর্যন্ত ৬০ থেকে ৬২ জন শিশু ভর্তি আছে।


আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত


এ দিকে মীতের গরম কাপড়ের দোকানগুলিতে ভীর বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে শীতের কাপড়। যেমন ; জেকেট, সুয়েটার , মাফলার,টাউজার ও শিশুদের শেিতর কাপড়। সিনেমা মার্কেটের কাপড় বিক্রেতা আব্দুল হালিম বলেন ‘বেচাকেনা বেড়েছে। তবে আমাদের লাভ কমে গেছে।কার গাইডের দাম বেড়েছে‘ কিন্তু আমরা বেশি দামে এ সব কপড় বিক্রি করতে পারছিনা। আগে যেমন একটি গরম কাপড় বিক্রি করলে লঅব হতো ২০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা। একন ১০০ টাকা লাভ করা কঠিন।তবে এসব কাপড়ের দোকানে অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষকে দেখা যায়না। 


পঞ্চগড় সদর উপজেলার রজরী খালপাড়ার বাসিন্দা ভ্যান চালক মনসুর আলী(৫৫) বলেন ভাড়া খুব কম। সংসার আছে তাই এই শীতে ভ্যা নিয়ে বেড়িয়েছি।বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা অটো চালক রশিদুল হক (৩০) বলেন ‘ভাড়া কম এখন। শীত করার কিছু নাই। অটো না চালালে কে খাওয়াবে।


জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন‘  সরকারি পর্যায়ে ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাওয়া ২৮ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে এবং অব্যাহত আছে।আরো শীতবস্ত্রের চাহিদা দিয়ে পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই তা পাওয়া যাবে। তাছাড়া বেসরকারি ভাবে ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা সমন্বয় করে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করছি।


আরএক্স/