১৫ টাকা কমতে পারে পেট্রোল-অকটেনের দাম

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। এখন থেকে প্রতি মাসেই নতুন দাম ঘোষণা করা হবে। শিগগিরই চলতি মার্চের জন্য নির্ধারিত দামের প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। এতে ডিজেলের দাম কমতে পারে প্রতি লিটারে ৪ টাকা। তবে অকটেন ও পেট্রলের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা কমানো হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) জারি হতে পারে চলতি মাসের দামের প্রজ্ঞাপন। এ দফায় পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটারে ১৫ টাকা এবং ডিজেলের দাম লিটারে কমতে পারে ৫ টাকা।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
খুচরা পর্যায়ে বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম রয়েছে ১০৯ টাকা, পেট্রোল ১২৫ টাকা ও অকটেনের দাম ১৩০ টাকা। জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নতুন মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডিজেলের ৫ টাকা ও পেট্রোল-অকটেনের দাম ১৫ টাকা কমে যথাক্রমে ১১০ টাকা ও ১১৫ টাকা নির্ধারণ হতে পারে।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকা প্রকাশ করে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়, দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রোল ব্যক্তিগত যানবাহনে অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। তাই বাস্তবতার নিরিখে বিলাস দ্রব্য হিসেবে সবসময় ডিজেলের চেয়ে অকটেন ও পেট্রোলের দাম বেশি রাখা হয়।
বিজ্ঞাপন
যদিও গত সেপ্টেম্বরে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি চালুর কথা বলা হয়। তবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য তা পিছিয়ে নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে জ্বালানি তেলের নতুন মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই তা কার্যকর করা হবে। এখন থেকে প্রতি মাসেই জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করা হবে।
বুধবার (৬ মার্চ) এক ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে গ্রাহকদের জ্বালানি দিতে চাই। আগামীকাল (আজ) থেকেই জ্বালানি তেলের দামে একটা পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। এরপর থেকে প্রতিমাসের প্রথম সপ্তাহে দাম নির্ধারণ করা হবে। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা চালু করতে পারলে খরচ কমে আসবে। বিশ্ববাজারে যদি কোনো পরিবর্তন না হয়, তাহলে তেলের ক্ষেত্রে দাম আরো কমে আসবে।
বিজ্ঞাপন
দেশে জ্বালানি তেলের আমদানি, বিক্রয় ও বিপণন করে থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিপিসি। এর মধ্যে অকটেন ও পেট্রোল বিক্রি করে সবসময়ই মুনাফা করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ডিজেল বিক্রির উপর বিপিসির লাভ-লোকসান নির্ভর করে থাকে। দেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের ৭৫ শতাংশই ডিজেল। দীর্ঘ সময় ধরে ডিজেল বিক্রি করে মুনাফা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিজ্ঞাপন
তবে জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি। আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। ভর্তুকির চাপ এড়াতে ২০২২ সালের আগস্টে গড়ে ৪২ শতাংশ বাড়ানো হয় জ্বালানি তেলের দাম। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২৩ দিনের মাথায় প্রতি লিটারে ৫ টাকা করে দাম কমানো হয়।
বিজ্ঞাপন
ভর্তুকি সমন্বয়ের কথা বলে দাম বাড়ানোর পর গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে হয়েছে ৪ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা মুনাফা করে বিপিসি। তার মধ্যে সরকারকে লভ্যাংশ দিয়েছে ২০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেও (জুলাই-ডিসেম্বর) ৫০০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে সংস্থাটি। এরপরও মূল্য সমন্বয় করা হয়নি।
বিজ্ঞাপন
জেবি/এজে








