মধ্যবর্তী নির্বাচন কোন দুঃখে, মামা বাড়ির আবদার: ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, ১০ই মার্চ ২০২৪
বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রমাণ হয়েছে, শেখ হাসিনার হাতেই দেশের গণতন্ত্র নিরাপদ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় বিএনপির দাবি উড়িয়ে দিয়ে তিনি প্রশ্ন রাখেন, মধ্যবর্তী নির্বাচন কোন দুঃখে? মামা বাড়ির আবদার?
রবিবার (১০ মার্চ) দুপুরে ধানমন্ডিতে আ. লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক প্রেস কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আজ সন্ধ্যায় দেশে ফিরলেন ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজ দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপির মতো একটা দল যোগাযোগ ক্রমেই হারিয়ে ফেলছে। প্রমাণ হয়েছে, শেখ হাসিনার হাতেই দেশের গণতন্ত্র নিরাপদ। তার হাতেই বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। তার হাতে যত দিন আছে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের বাস্তবতা বোঝেন। মানুষের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে পারেন। আর বিএনপি তা বুঝতে ব্যর্থ হওয়ায় রাজনীতি থেকে ক্রমেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বিএনপিসহ সমমনা দলের সহিংসতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সমমনস্করা যদি ষড়যন্ত্র করে, সন্ত্রাস করে, তার মানে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা নেই, এটা মনে করার কারণ নেই। সন্ত্রাস যেখানে আছে, বিএনপি সেখানে আছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের নিজস্ব একটা হিসাব-নিকাশ আছে এবং পশ্চিমা বিশ্বের অ্যালায়েন্স, সে অ্যালায়েন্স রক্ষা করার বিষয়টি আছে, তারা কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছে, এখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নও কিছুটা সুর মিলিয়েছে। তবে আমরা গুরুত্ব দেবো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে কী বলেছেন। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, মানদণ্ডের বিষয়টি একেকজনের কাছে একেক রকম। বাংলাদেশে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো, এই নির্বাচনের মানদণ্ড যদি খুবই তলানিতে গিয়ে পৌঁছাত, তাহলে আজ ইউরোপে ইউনিয়ন, ওয়াশিংটন হাউসের প্রশংসাসূচক মন্তব্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতাম। আমাদের মানদণ্ডে ঠিক আছে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় নির্বাচনের মানদণ্ড ঠিক আছে। রিয়েলিটির সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে।
ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ ২৩১টি স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। যেখানে ভোট পড়েছে গড়ে ৬০ শতাংশ। নির্বাচন মোটামুটি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। সরকার কোনও প্রকার হস্তক্ষেপ করেনি। ভোট শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু হওয়ায় তিনি নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ ও বিজয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই নির্বাচনে অনেক জায়গায় বিএনপি নেতারা অংশ নিয়েছেন। কিছু নেতা জয়লাভও করেছেন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ছিল না। এই নির্বাচনের পরও বিএনপির মুখে নির্বাচন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আর কোনও কথা বলার যৌক্তিকতা থাকে না। তারা যত দোষ নন্দ ঘোষ—এ ধরনের একটা আচ্ছন্ন মানসিকতায় ভুগছে এবং সেটাই তারা করে যাচ্ছে।
সিঙ্গাপুর চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সেখানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের কোনও বৈঠক হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুনেছি তারা সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু কারও সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হয়নি।
আরও পড়ুন: রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করা হবে
মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবি উড়িয়ে দিয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রাখেন, মধ্যবর্তী নির্বাচন কোন দুঃখে? মামা বাড়ির আবদার?
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
জেবি/এজে