ক্রেতাশূন্য মোকাম, ধান নিয়ে বিপাকে ভৈরবের ব্যবসায়ীরা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ অপরাহ্ন, ৩০শে এপ্রিল ২০২৪


ক্রেতাশূন্য মোকাম, ধান নিয়ে বিপাকে ভৈরবের ব্যবসায়ীরা
ছবি: প্রতিনিধি

বৈশাখের নতুন ধানে ভরপুর কিশোরগঞ্জ ভৈরবের মোকাম। তবে বাজারে ক্রেতা কম থাকায় দুশ্চিন্তায় ধান বিক্রেতারা। 


সোমবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরের দিকে ভৈরবের মোকামে দেখা যায়, একাধিক ধানবোঝাই নৌকা ঘাটে নোঙ্গর করা। সবকটি নৌকা হাওর থেকে এসেছে। শ্রমিকরা নৌকা থেকে ধান খালাস করে ঘাটে স্তূপ আকারে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখছেন। এসব ধান ঘাটেই কেনাবেচা হয়ে থাকে।


হবিগঞ্জের আজমেরিগঞ্জ শাহ হোসেন মাঝি ধানবোঝাই নৌকা নিয়ে ভৈরব ঘাটে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে ২ হাজার ৪০০ মণ বৈশাখী ধান নিয়ে আমরা ভৈরব মোকামে এসেছি। এ বছর হাওরে ধানের ফলন অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে। তাই কৃষকরা পাইকারদের কাছে ধান বিক্রি করেছেন। তবে এ বছর ধানের দাম খুব কম। তাই ফসল বেশি পেলেও দাম না পাওয়ায় মন ভালো নেই কৃষকদের।’


ভৈরব মোকামের আব্দুস ছাত্তার মিয়া অ্যান্ড সন্স একটি প্রতিষ্ঠিত ধানের আড়ত। এই আড়তের প্রতিনিধিরা ঘাটে নৌকা বোঝায় ধান বিক্রির জন্য ঘাটে স্তূপ করে সাজিয়ে রাখছেন। এ সময় আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘হাওর এলাকায় এখন পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এসব এলাকা থেকে নৌকাযোগে বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত ধান মোকামে আসছে। তবে মোকামে খরিদ্দার কম থাকায় ধান বিক্রি করতে পারছি না। সরকার যদি কৃষক পর্যায় থেকে ধান কেনা শুরু করে তাহলে কৃষক ও আমরা ব্যবসায়ীরা ধানের নায্য দাম পাব।’


আরও পড়ুন: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন


বর্তমানে ধানের বাজারে মোটা ধান প্রতি মণ ৭৮০-৮০০ টাকা ও চিকন ধান প্রতি মণ ৯০০-৯২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।


আজমেরিগঞ্জের কাকাইলছেও ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের ধানের ব্যাপারী রফিক উদ্দিন বলেন, ‘বাজারে বাহির এলাকার খরিদ্দার খুব কম। তাই নতুন ধান বিক্রি করতে পারছি না। সরকারের দাম নির্ধারণের আশায় মিল মালিকরা বসে আছেন। যখন দাম নির্ধারণ করবে তখনই ক্রেতাদের আগমন বাড়বে।’


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার হাওরে এবার বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। গত বছর চিটায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন কৃষকরা। বিশেষ করে গত বছর চিটার কারণে বিআর-২৮ ধান অনেক কৃষক গোলায় তুলতে পারেননি।


এবার বৈশাখ মাসের কয়েক দিন আগ থেকে হাওরে মোটা জাতের ধান কাটা শুরু হয়। মোটা জাতের ধানের বিঘাপ্রতি গড় ফলন ২২ মণ পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত এই ধান বিঘায় ১৮ মণের বেশি উৎপাদন হয় না। উৎপাদন বাড়ার মূল কারণ ধানের পরিপূর্ণ পুষ্টতা। ধানের ব্যাপারীরা হাওর এলাকার কৃষকের কাছ থেকে মণপ্রতি ৮০০ টাকা দরে কিনছেন।


ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হুমায়ুন কবীর বলেন, নতুন ধান প্রতি মণ ৭৮০-৮০০ টাকা দরে বিক্রি করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন না। কৃষকরা ধান উৎপাদনে যে ব্যয় করেছেন, তা পুষিয়ে উঠতে পারবেন না। যদিও কৃষকরা বর্তমান বাজারে ভেজা ধান বিক্রি করছেন। যদি শুকনা ধান বাজারে আসে, তাহলে ধানের দাম বাড়বে বলে তিনি আশা করছেন।


এমএল/