কক্সবাজারের গহীন পাহাড় ঘীরে এলাকাবাসি উদ্ধার করল অপহৃত ৩ জনকে
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, ২রা মে ২০২৪
কক্সবাজারে টেকনাফের গহীন পাহাড় ঘীরে এলাকাবাসি এবার সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে অপহৃত একই পরিবারের ৩ জনকে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) ভোর রাত ৩ টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মোছনী এলাকা থেকে অপহরণ করা হয় এই ৩ জনকে। পরে ভোর থেকে পুরো পাহাড় ঘীরে শত শত এলাকাবাসি সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। সকাল ১০ টার দিকে পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত এই ৩ জনকে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী ও স্থানীয় ই্উপি সদস্য মোহাম্মদ আলী।
অপহৃতরা হলেন, হ্নীলা ইউনিয়নের মোছনী গ্রামের আশরাফ জামানের ছেলে নীর আহমেদ (৬০) ও হাবিবুর রহমান (৫৫), হাবিবুর রহমানের তার ছেলে নুর ফয়েজ (১৩)।
স্থানীয় ই্উপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, প্রতিদিনের মতো হ্নীলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মোছনী গ্রামের বাসিন্দা নীর আহমেদ, হাবিবুর রহমান ও তার শিশু ছেলে নুর ফয়েজ মোছনী নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিম পাহাড়ের পাদদেশে ধান ক্ষেত পাহারা দিচ্ছিলেন। এসময় ভোর রাত ৩টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত এসে তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে। অপহরণের খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ শত শত এলাকাবাসি পুরো পাহাড় ঘীরে লাঠি হাতে অভিযান শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে আসার এক পর্যায়ে অপহরণকারি চক্রের সদস্যরা কৌশলে পালিয়ে গেলেও সকাল ১০ টার দিকে ৩ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন: টেকনাফ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, একের পর এক অপহরণের ঘটনায় বিক্ষুব্দ এলাকাবাসি এখন সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে শুরু করেছে। এর জের ধরেই পাহাড়ে এলাকাবাসির এই অভিযান। দ্রুত সময়ের মধ্যে ৩ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তিনি এলাকাবাসিকে অপহরণ সহ সকল অপরাধ রোধে সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার আহবানও জানান।
টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি জানান, অপহরণের বিষয়টি জেনে এলাকাবাসি পুলিশের আগের পাহাড় ঘীরে রাখে। এর মধ্যে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এক পর্যায়ে ৩ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের অধিনে উদ্ধার ৩ জন রয়েছে। এদের সাথে আলাপ করা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
ওসি জানান, ইতিমধ্যে পুলিশ অপহরণ রোধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। অভিযানে গত এক সপ্তাহে অপহরণে জড়িত অনন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এ নিয়ে গত ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ২ মে পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২৪ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬৬ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের পরিবারের তথ্য বলছে অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৩ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।
এমএল/