টপ অর্ডারের ব্যর্থতা নিয়েই বিশ্বকাপে যাচ্ছে বাংলাদেশ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১২ অপরাহ্ন, ১২ই মে ২০২৪
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুতি যাচাই করতে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ। তবে দলে প্রথম ম্যাচ থেকেই টপঅর্ডারের ব্যর্থতা ছিল লক্ষ্যণীয়। ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও পুরো সিরিজ জুড়েই ব্যাটিংয়ে ছিল অস্বস্তি। তবে পঞ্চম তথা শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের একাদশ ছিল অনেকটাই অবাক করার মতো। একজন বোলারের বিপরীতে দল সাজানো হয় ১০ জন ব্যাটারকে নিয়ে। অবশ্য এত ব্যাটসম্যান নিয়েও সন্তোষজনক কোনো স্কোর তুলতে পারে নি টাইগার বাহিনী।
রবিবার (১২ মে) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বেশ চাপে পড়ে যায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। পরবর্তীতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ফিফটিতে খুরাতে খুরাতে দেড়শো পেরোয় স্বাগতিকদের ইনিংস। যা শেষ পর্যন্ত হার ঠেকাতে হয়েছে । ৮ উইকেটের দারুণ এক ইনিংস খেলে শেষ ম্যাচে জয়ের হাসি হেসেছে সফরকারী জিম্বাবুয়ে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ২০ দলের টি-টোয়েন্টির বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ২ জুন। এরই মধ্যে বেশিরভাগ দলই ঘোষণা করেছে তাদের স্কোয়াড। বাংলাদেশও যে কোনো সময় নিজেদের দল ঘোষণা করতে পারে।
আরও পড়ুন: টাইগারদের ৮ উইকেটে হারিয়ে ধবলধোলাই এড়াল জিম্বাবুয়ে
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটের বড় জয়ে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। অবশ্য এই ম্যাচটার ক্রেডিট বোলারদেরই দেওয়া যায়। টস জিতে সফরকারীদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ১২৪ রানের বেশি পুঁজি গড়তে দেয়নি স্বাগতিকরা। তাসকিন ও সাইফউদ্দিনদের দাপুটে বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে বড় পরীক্ষায় পড়তে হয়নি টাইগার বাহিনীদের।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও শান্তর আমন্ত্রণে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় রান সংগ্রহ করতে পারেনি সফরকারীরা। ১৩৯ রানের স্বস্তা টার্গেট তাড়ায় ৬ উইকেটে জিতলেও স্বাগতিক ব্যাটারদের খরচ করতে হয়েছে ১৮ দশমিক ৩ ওভার। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর জিততে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে টাইগারদের। প্রথম দুই ম্যাচে টস জিতে শুরুতে বোলিং বেছে নেওয়ায় সমালোচনা হচ্ছিল। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য টস ভাগ্য সহায় হয়নি টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর।
জিম্বাবুয়ে সিরিজে কে কত করলেন
ক্রিকেটার তানজিদ তামিম, নাজমুল শান্ত ও তাওহিদ হৃদয় ৫ ইনিংসে করেছেন যথাক্রমে- ১৬০,৮১,১৪০ রান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলির ৪ ইনিংসে সংগ্রহ ৮৯,৮৭ রান।
চট্টগ্রামে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ১৬৫ রানের পুঁজি গড়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ১৫৬ রানের বেশি করতে পারেনি রোডেশিয়ানরা। বোলারদের কল্যাণে ৯ রানের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। টানা তিন জয়ে সিরিজ জিতলেও লিটন, শান্তদের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনা তুঙ্গে ছিল। চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ের অস্বস্তিটা আরও বেড়েছে ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল ঘোষণা রবিবার
মিরপুরে তানজিদ তামিম ও সৌম্য সরকারের উদ্বোধনী জুটির রান একশ ছাড়ায়। তবে ১০১ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর যেন ধস নামে। ১০১ থেকে ১৪৩। মাত্র ৪২ রানের ব্যবধানে ১০টি উইকেট হারায় স্বাগতিক ব্যাটাররা। বিশ্বকাপের আগে এমন ব্যাটিং নিশ্চিতভাবেই রেড সংকেত। সর্বশেষ আজ সিরিজের শেষ ম্যাচেও ১০ ব্যাটার নিয়ে খেলতে নেমে ১৫৭ রানের বেশি পুঁজি গড়তে পারেননি শান্ত-সৌম্যরা।
পাঁচ ইনিংসে ৪০ গড়ে ১৬০ রান নিয়ে সিরিজের টপ স্কোরার তানজিদ হাসান তামিম। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তাওহিদ হৃদয়। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪০ রান। এ ছাড়া বাকিদের অবস্থা করুণ।
বিশ্বকাপের পূর্বমুহূর্তে নিজেদের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ। এমন চেনা সিলেবাসেও পথ হারিয়েছে বাংলাদেশের টপঅর্ডার। তবে বর্তমানে পরীক্ষা নিরীক্ষার আর সময় নেই। ব্যাকফুটে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়েই বিশ্বকাপে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে হবে বাংলাদেশকে।
জেবি/আজুবা