বাঘের পর এবার কুমিরের মুখ থেকে বেঁচে ফিরলেন মৌয়াল কুদ্দুস


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:১৬ পূর্বাহ্ন, ১৬ই মে ২০২৪


বাঘের পর এবার কুমিরের মুখ থেকে বেঁচে ফিরলেন মৌয়াল কুদ্দুস
ছবি: সংগৃহীত

সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে গিয়ে বাঘের পর এবার কুমিরের মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছেন আবদুল কুদ্দুস (৫৫) নামে এক মৌয়াল।


সোমবার (১৩ মে) রাতে তাকে নিয়ে লোকালয়ে ফিরেছেন তার ছোট ভাই আবদুল হালিমসহ অন্যান্য সহকর্মীরা। আবদুল কুদ্দুস সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের বাসিন্দা।


আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানিতেই পুরোপুরি নিভলো সুন্দরবনের আগুন


এর আগে ২০১৫ সালে মধু কাটতে গিয়ে সুন্দরবনের তালপট্টি এলাকায় বাঘের কবলে পড়েছিলেন আবদুল কুদ্দুসসহ ৭ জনের একটি দল।


আবদুল কুদ্দুসের ছোট ভাই আবদুল হালিম জানান, গত ১১ মে দুপুরে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া নদীতে গোসল করার সময় কুমিরের আক্রমণের শিকার হন আবদুল কুদ্দুস। ভাইকে বাঁচাতে চিৎকার করে দলের অন্য চার সদস্য বক্স গাজী, শহিদুল, সিরাজুল ও এলাই বক্সের সহযোগিতা চান তিনি। একপর্যায়ে সবাই মিলে আবদুল কুদ্দুসের দুই পা ধরে টানাটানি এবং পানিতে প্রচণ্ড শব্দ তৈরি করি, এতে করে কুমিরটি শিকার ছেড়ে চলে যায়।


মৌয়ালদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৭-৮ দিন আগে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন থেকে মধু সংগ্রহের পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে সুন্দরবনে ঢোকেন ছয় মৌয়াল। তাদের দলে ছিলেন আবদুল কুদ্দুস। ঘটনার দিন অল্প সময়ের ব্যবধানে দুটি চাক পাওয়ায় সবাই খোশমেজাজে ছিলেন। এক পর্যায়ে দুপুর আড়াইটার দিকে কলাগাছিয়া নদীর চরে হাঁটুপানিতে নেমে গোসল করার সময় কুমিরের আক্রমণের শিকার হন তিনি।


কুমিরের আক্রমণের শিকার আবদুল কুদ্দুস বলেন, কুমির যখন আমার হাত কামড়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, আমি কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলি। কুমির ঘুরপাক খেতে থাকায় আমিও সমানতালে পানিতে ডুবে গিয়ে আবার ভেসে উঠি। নিশ্বাস নিতে না পারায় দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় আর কিছু মনে নেই।


আরও পড়ুন: সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ধোঁয়া দেখলেই পানি স্প্রে


মৌয়াল সিরাজুল ইসলাম বলেন, কুমির চলে যাওয়ার পর আবদুল কুদ্দুসকে ডাঙায় নিয়ে সরিষার তেল ও ঘাসপাতা ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রক্ত বন্ধ করি। ঝড়ের কারণে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিতে দেরি হয়। সোমবার রাতে লোকালয়ে পৌঁছাই।


এ বিষয়ে সুন্দরবনের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, গত পাঁচ বছরে সুন্দরবনে গিয়ে বাঘের আক্রমণে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে কুমির ও বাঘের আক্রমণে আহত হন দুইজন। সুন্দরবনে গিয়ে বাঘ, কুমিরসহ হিংস্র প্রাণী থেকে নিরাপদে থাকার বিষয়ে যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে মৌয়ালদের সতর্ক করা হয়।  


তিনি বলেন, বৈধভাবে এসব ব্যক্তি মধু সংগ্রহে সুন্দরবনে যান। চিকিৎসা নিয়ে এলাকায় ফিরে আবেদন করলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করে সরকারি সহায়তার জন্য আহত মৌয়ালের নাম প্রস্তাব করা হবে।   


জেবি/এজে