সুন্দরবন, বেনাপোল ও চিত্রা ট্রেনের রুট বহালের দাবিতে ভেড়ামারায় মানব বন্ধন


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:৪১ অপরাহ্ন, ২৫শে মে ২০২৪


সুন্দরবন, বেনাপোল ও চিত্রা ট্রেনের রুট বহালের দাবিতে ভেড়ামারায় মানব বন্ধন
ছবি: প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা রেলওয়ে স্টেশন থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বহুল জনপ্রিয় আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকাগামী সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির রুট বদল করা হয়েছে। আবার হঠাৎ করেই জুন মাস থেকে আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ঢাকাগামী ট্রেনের রুট বদল করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই কারণে ফুঁসে উঠেছে ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও মিরপুর তিন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। সুন্দরবন ও বেনাপোল এবং চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন পনুরায় যমুনা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য জোর দাবী ও প্রতিবাদ জানিয়ে এলাকার হাজার হাজার বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ মানববন্ধন কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভেড়ামারাবাসী তীব্র আনন্দলেনের পথ বেছে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী দিচ্ছে।


শনিবার (২৫ মে) সকাল ১০টার দিকে ভেড়ামারা নাগরিক কমিটির উদ্যোগে রেলওয়ে স্টেশনে ৩ উপজেলার সর্বস্তরের বিভিন্ন সংগঠনের জনসাধারণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভেড়ামারা রেলওয়ে স্টেশন চত্বর ও প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন সংগঠনের স্ব’স্ব ব্যানার নিয়ে তীব্র রোদের মধ্যে রেল লাইনের ভিতর দাড়িয়ে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।


ইতোপূর্বে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকামুখী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্টেন ভেড়ামারা হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে ঢাকা যাতায়াত করতো। ফলে কুষ্টিয়ার মিরপুর, দৌলতপুর, ভেড়ামারা, মেহেরপুরের গাংনি, মেহেরপুর অঞ্চলের যাত্রীরা ভেড়ামারা রেলস্টেশন ব্যবহার করে সিরাজগঞ্জ, ক্যাপ্টেন মনসুর, যমুনা পূর্ব ও পশ্চিম, টাঙ্গাইল, জয়দেবপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, কমলাপুর যাতায়াতের বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করতো ট্রেন যাত্রীরা। সদ্য সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুলে নিয়ে ট্রেনের রুট পরিবর্তন করায় এ অঞ্চলের যাত্রীরা উল্লেখিত স্থানগুলোয় যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম বিড়ম্বনায় শিকার হচ্ছে।


আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় পরকীয়ার জেরে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৩


রেল স্টেশন সূত্রে জানা যায়, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বছর ১ নভেম্বর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও ২ নভেম্বর বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন যমুনা সেতু দিয়ে না যেয়ে,পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা টু ঢাকা চলাচল শুরু করেছে। 


এর ফলে ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও মিরপুর উপজেলার শত শত ঢাকাগামী ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুধু তাই না বেশ বিপাকে পড়েছে টাঙ্গাইল, জয়দেবপুর ও এয়ারপোর্টে বিদেশগামী যাত্রীরা। 


আবার চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন জুন মাসে রুট বদলের কথা শোনা যাচ্ছে। ফলোশ্রুতিতে ভেড়ামারা, মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলার মানুষ ট্রেনে ঢাকায় যেতে অনেক কষ্টসাদ্ধ হয়ে পড়বে।


এই জন্য মানববন্ধনের ডাকদেয় ভেড়ামারাবাসী। অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন, ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল মুকুল। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল কেন্দ্র কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম স্বপন। সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আক্তারুজ্জামান মিঠু। ভেড়ামারা পৌরসভার সাবেক মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শামিমুল ইসলাম ছানা। ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রাজা। ভেড়ামারা প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিরুল ইসলাম মান্নান। কুষ্টিয়া জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তানজীদ লোটাস, আওয়ামী লীগ নেতা আবু দাউদ, ভেড়ামারা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ। নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ, অন্যতম সদস্য অসীত কুমার রায় প্রমুখ।


আরও পড়ুন: টানা তিনবার উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন মান্নান খান


এ সময় আন্দলনকারীরা বলেন, আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকাগামী সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন পদ্মা সেতু দিয়ে নয়, পূর্বের মতো ট্রেনগুলো ভেড়ামা হয়ে যমুনা সেতু দিয়ে ঢাকায় নেওয়া হোক তা হলেই ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও মিরপুর উপজেলার হাজার হাজার ট্রেনযাত্রীরা চরম ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে। যদি তা না করা হয়। আগামীতে বিভিন্ন কর্মীসূচীর মধ্যে দিয়ে জনগণের দাবী আদায় করতে সরকারকে বাধ্য করবো। কঠোর আনদোলন গড়ে তুলবো। 


ভেড়ামারা স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট পরিবর্তন সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখনো আমাদের কোনো তথ্য প্রদান করে নাই। তবে লোকমুখে শোনা যাচ্ছে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট পরিবর্তন করা হবে।


এমএল/