নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির সাথে চোরাকারবারির গোলাগুলি, নিহত ১


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৫৯ অপরাহ্ন, ৩রা জুন ২০২৪


নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির সাথে চোরাকারবারির গোলাগুলি, নিহত ১
ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির মাদক ও চোরাচালান বিরোধী টহলদলের ওপর চোরাকারবারিরা গুলিবর্ষণ করেছে। এসময় বিজিবি'র ব্যবহৃত ৩ টি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ এবং একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে।


এ ঘটনায় বিজিবির পাল্টা গুলিতে নেজাম উদ্দিন নামের চোরাকারবারি চক্রের এক নিহত হয়েছে। তবে নিহতের ব্যাপারে বিজিবির কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


সোমবার ভোরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তবর্তী কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের মরিচ্যাচর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে বিজিবি, স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা নিশ্চিত করেছেন।


সোমবার দুপুর ১ টার দিকে বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির মাদক ও চোরাচালান বিরোধী নিয়মিত টহলদলের ওপর চোরাকারবারিরা গুলিবর্ষণ করে। এসময় বিজিবি’র মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঘটনায় আত্মরক্ষার্থে বিজিবি'র সিদস্যরারাও গুলি বর্ষণ করে। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা ও বার্মিজ সিগারেট উদ্ধার করা হয়েছে।


তবে তিনি কয়টি মোটর সাইকেলে অংগ্নিসংযো্গ করেছে বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।


তিনি জানান, এ ঘটনায় কেউ নিহত হয়েছে কিনা নিশ্চিত নন। নিহত হলে মরদেহ পাওয়া যেত।


গর্জনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বাবুল জানিয়েছেন, বিজিবির সাথে চিহ্নিত চোরাকারবারি গোলাগুলি হয়েছে। এসময় বিজিবির ৩টি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ এবং একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের নেজাম উদ্দিন নামের এক চোরাকারবারি নিহত হয়েছে বলে শোনা গেছে। নিহতদের মরদেহ তার সিন্ডিকেটের সদস্য নিয়ে গেছে।


গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পুরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, এলাকার লোকজন বিজিবির সাথে চোরাকারবারির গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে বলে জানাচ্ছে। কিন্তু মরদেহ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।


এদিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া এলাকা থেকে দুপুর ১ টার দিকে নেজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানোর তথ্য জানিয়েছেন খুরুশকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাজাহান সিদ্দিকী।


তিনি জানান, কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার বহুল আলোচিত ডাকাত আবুল বশর পরিবার কয়েক বছর আগে খুরুশকুলের ঘোনাপাড়া এলাকায় এসে বসবাস শুরু করে। সোমবার সকালে তার বশরের ছেলে নেজামের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে তার চক্রের সদস্যরা। খবর পেয়ে গুলিবিদ্ধ মরদেহটি উদ্ধার কেরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশকে জানানো হয়েছে।


চেয়ারম্যান শাহাজাহান জানান, নেজাম ডাকাত গর্জনিয়ায় বিজিবির সাথে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে বলে নানাভাবে শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে ওখান থেকে মরদেহটি সহযোগিরা বাড়িতে নিয়ে এসেছিল।


তিনি বলেন, আবুল বশর একজন চিহ্নিত ডাকাত এবং তার ছেলেরা ডাকাতি ও চোরাকারবারে জড়িত বলে এলাকার লোকজন জানেন।


কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, খুরুশকুলে নেজাম নামের একজনের মরদেহ বাড়ি থাকার তথ্য পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। যদি গুলিবিদ্ধ হয়ে থাকে তাহলে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতারের মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে কার গুলি, কোথায় এ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এব্যাপারে পুলিশ কাজ করছে।


দুপুর ২ টা ৫ মিনিটে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে নেজামের মরদেহ আনা হয়। যেখানে কথা হয়েছে নেজামের পিতা আবুল বশরের সাথে। তিনি বলেন, গর্জনিয়ায় গত ৩ দিন আগে এক বন্ধু বাড়িতে আমার ছেলে নেজাম বেড়াতে গিয়েছিল। সকালে তার বন্ধুরা ফোন দিয়ে জানিয়েছে বিজিবির গুলিতে নেজাম নিহত হয়েছে। তার বন্ধুরা নেজামের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে এসেছিল।