টেকনাফের প্লাবিত এলাকার পানি নেমে যাচ্ছে


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৩৮ অপরাহ্ন, ২০শে জুন ২০২৪


টেকনাফের প্লাবিত এলাকার পানি নেমে যাচ্ছে
ছবি: প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফে বুধবার (১৯ জুন) বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকাল পর্যন্ত আর বৃষ্টি হয়নি। ফলে প্লাবিত এলাকা থেকে নেমে যাচ্ছে পানি। টেকনাফ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। এতে প্রায় ৮ হাজার পরিবারের ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী ছিলেন। পানি নামতে শুরু হওয়ায় ওই এলাকার মানুষের ভোগান্তি কমে এসেছে।


এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী।


মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে না পারায় প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। নাফনদীর কয়েকটি সুইচগেইট নিমাণাধীন থাকায় পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামগুলো প্লাবিত হযেছে। পরে বাঁধের বিভিন্ন অংশে কেটে দিলে ঢলের পানি নাফনদীতে প্রবাহিত হয়। এরমধ্যে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের স্ব স্ব ইউনিয়নের মাধ্যমে তালিকা প্রণয়ণ করা হচ্ছে। তাদের সরকারি সহযোগিতা করা হবে।


আরও পড়ুন: মিয়ানমারে সংঘাত: সীমান্তের ওপারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ থামছে না


কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপসহকারী পরিচালক তোফায়েল আহমদ জানান, বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি।


বুধবার প্রবল বর্ষণে টেকনাফ উপজেলায় হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৮টি গ্রাম, হ্নীলা ইউনিয়নের ১২টি গ্রাম, টেকনাফ পৌরসভার ৭টি গ্রাম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৬টি গ্রাম, সাবরাং ইউনিয়নের ৭টি গ্রাম, বাহারছড়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তবে বুধবার বিকেল থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু হয়েছে।


হ্নীলার লামারপাড়ার বাসিন্দা আলী আকবর জানান, পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের পানি তার বাড়িতে কোমর সমান পানি ঢুকে পড়েছিল। বুধবার বিকেলের পর থেকে আর বৃষ্টি না হওয়ায় পানি নেমে যাচ্ছে। বাড়ির অধিকাংশ জিনিসপত্র ভিজে যাওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে পাশাপাশি নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়। 


আরও পড়ুন: মিয়ানমারের জাহাজ, বিস্ফোরণের শব্দও বন্ধ


একই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, তাদের গ্রামের রাস্তার একটি অংশ ভেঙে যাওয়ায় মানুষের চলাচল করতে  সমস্যা হচ্ছে। উঁচু জাযগার পানিগুলো নেমে গেলেও নিচু জায়গার পানিগুলো নামতে সময় লাগতে পারে। 


ওয়াব্রাং এলাকার বাসিন্দা আলী আহাম্মদ বলেন, ঘরের অধিকাংশ জিনিসপত্র ভিজে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র এগিয়ে রাত যাপন করেছেন। পানি নেমে যাওয়াই পরিবারের লোকজন ঘরে ফিরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।


হ্নীলার ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী, হোয়াইক্যং ইউপির চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী ও সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নূর হোসেন, প্লাবিত এলাকার গ্রামগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসতে শুরু হয়েছে। তবে নাফনদীর তীরে নির্মানাধীন সুইচগেইট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়।


আরও পড়ুন: শাহপরীর দ্বীপে একদিনে দুই খুন, উত্তপ্ত পরিস্থিতি  


কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেকনাফের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, নাফ নদীর কয়েকটি সুইচগেইট নির্মানাধীন ছিল। বিকল্প ব্যবস্থা থাকলেও সেগুলো দিয়ে পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির পানি দ্রুত নামতে না পারায় কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পরে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বাঁধের বিভিন্ন অংশে কেটে দেওয়া হয়। রাতে আর বৃষ্টি না হওয়ায় পানি নামতে শুরু করেছে।টেকনাফের প্লাবিত এলাকার পানি নেমে যাচ্ছে।


এমএল/