৪ বছরে চার লক্ষাধিক টাকা ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, ২৫শে জুন ২০২৪


৪ বছরে চার লক্ষাধিক টাকা ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে
ছবি: প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনের বিষয়ে প্রতিদিনই বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।


চিনি চোরাচালানে জড়িত থাকা ও যৌন নিপীড়নে সহায়তার অভিযোগের পর তার বিরুদ্ধে ঘর ভাড়া নিয়ে তা পরিশোধ না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।


আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি মামলা


জেলা শহরের একরামপুর রেলক্রসিং সংলগ্ন গাজী মার্কেটে দুটি ঘর ভাড়া নিয়ে ছাত্রলীগের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন মোল্লা সুমন, তবে মার্কেট মালিক গাজী আবদুল হকের অভিযোগ, চার বছর ধরে তাকে একটি টাকাও ভাড়া দেননি তিনি।


গাজী আবদুল হক বলেন, দীর্ঘ ছয় বছর ধরে মোল্লা সুমন তার মার্কেটের দুটি ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে বসে ছাত্রলীগের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন, তবে চার বছর আগে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে ঘর ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।


তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসে ঘরপ্রতি সাড়ে ৪ হাজার টাকা ভাড়া দেয়ার কথা। সে হিসাবে দুইটি ঘরে প্রতি মাসে ৯ হাজার টাকা ভাড়া হয়।


‘গত চার বছরে চার লাখ টাকারও বেশি ভাড়া জমা পড়ে আছে সুমনের কাছে। ভাড়া চাইলে নানা টালবাহানা করে সে। যদি বেশি চাপ দিই, তবে তার সাথে ঝামেলা বাধবে। নিজের ক্ষতি হবে ভেবে ভাড়া চাওয়ার সাহস পাই না।’

আরও পড়ুন: হজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ৪ হাজি আহত


অভিযোগের বিষয়ে কী বলছেন সুমন


এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথা হয় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনের সঙ্গে।


তার দাবি, গত ছয়-সাত বছর ধরে এখানে বসে ছাত্রলীগের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন তিনি। এক মাসেরও ভাড়া বাকি রাখেননি।


ভাড়া দেয়ার রসিদ আছে কি না জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ঘর মালিক কাউকেই ভাড়ার রসিদ দেন না। এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ।’


কী বলছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ


কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘অপরাধীদের প্রশ্রয় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংগঠন এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ পরিপন্থি কাজের সাথে যারাই যুক্ত থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে এ রকম অনেকের ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনের ব্যাপারেও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


শহরের বিভিন্ন সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে জেলা ছাত্রলীগের এ নেতার বিরুদ্ধে।


সংগঠনের জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান নয়ন বলেন, ‘এমন কোনো দপ্তর নেই যেখানে জেলা ছাত্রলীগের নামে চাঁদাবাজি হয় না। স্ট্যান্ডগুলোতে ছাত্রলীগের সভাপতি ও তার অনুসারীরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের অত্যাচার ও মামলার হুমকি দেয়া হয়।’


তার দাবি, শহরের একরামপুর ও পুরানথানা সিএনজি স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করেন হীরা।


তিনি জানান, সিএনজি অটো স্ট্যান্ডের জায়গা মালিকপক্ষ ও স্থানীয় কাউন্সিলরদের কাছ থেকে দৈনিক ভিক্তিতে ভাড়া নিয়েছেন নাজমুল হীরা। একেক দিন একেক লোককে সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ করে অটোরিকশা থেকে প্রতি ট্রিপে ৫০ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে থাকেন তিনি।


প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০টি অটোরিকশা পুরানথানা ও একরামপুর থেকে চামটাঘাট ও বালিখলায় যায়। একরামপুর থেকে কিছু অটোরিকশা ভৈরব এবং গাজীপুরেও যায়। সে হিসাবে দিনে ১৫০ থেকে ২০০ অটোরিকশা চলে।


প্রতিদিন এভাবে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়, যা মাসে দাঁড়ায় চার লাখ টাকার মতো


জেবি/এসবি