মিয়ানমারে যুদ্ধ শেষে অস্ত্র সহ আটক আরসা কমান্ডার, আহত এপিবিএন সদস্য


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯:০৫ অপরাহ্ন, ১৪ই জুলাই ২০২৪


মিয়ানমারে যুদ্ধ শেষে অস্ত্র সহ আটক আরসা কমান্ডার, আহত এপিবিএন সদস্য
ছবি: প্রতিনিধি

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠি আরসার সামরিক শাখার ক্যাম্প প্রধান কামান্ডার মোহাম্মদ ইলিয়াস (২৬)। মিয়ানমার থেকে গত ১৫ দিন আগেই পালিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছিল ইলিয়াস। গোপন সংবাদে শনিবার (১৩ জুলাই) মধ্যরাতে আটকের জন্য অভিযান শুরু করলে এপিবিএন সদস্যদের উপর গুলি বর্ষণ করে। এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলি করে। এক পর্যায়ে ৩ জন পালিয়ে গেলেও বিদেশি দুইটি জি-থ্রি রাইফেল ও ৫০ টি গুলিসহ আরসা’র এই কমান্ডারকে আটক করে এপিবিএন পুলিশ। আর এর জের ধরে রবিবার ভোরে সংঘবদ্ধ হয়ে ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এপবিএন সদস্যদের উপর গুলি করে আরসা সন্ত্রাসীরা। ফলে এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলি করে। এতে আরসা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলেও সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন এপিবিএন সদস্য মো. শাহরাজ (২৫)। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


রবিবার (১৪ জুলাই) বিকাল উখিয়াস্থ ১৪ এপিবিএন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ১৪ এপিবিএন এর পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল।


এর আগে শনিবার মধ্যরাত দেড়টায় উখিয়া উপজেলার ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মেইন এ-ব্লকে এ অভিযান চালিয়ে বিদেশি দুইটি জি-থ্রি রাইফেল ও ৫০ টি গুলিসহ আরসা কমান্ডারকে মোহাম্মদ ইলিয়াস (২৬) আটক করা হয়। ইলিয়াস উখিয়ার ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-১৫ সাব ব্লকের মৃত হাসান আহমদের ছেলে।


আরও পড়ুন: নাফনদীর ওপারে টানা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ আর আগুনের কুণ্ডলী


এর জের ধরে ক্ষিপ্ত রবিবার ভোরে উখিয়া উপজেলার মধুরছড়া ৪-এক্সটেনশন নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ-ব্লকে আরসা সন্ত্রাসীরা গুলি বর্ষণ করে। এপিবিএন সদস্য মো. শাহরাজ (২৫) গুলিবিদ্ধ হন। তিনি এপিবিএন এর মধুরছড়া পুলিশ ক্যাম্পে কনস্টেবল পদে কর্মরত।


সংবাদ সম্মেলনে আরেফিন জুয়েল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মেইন এ-ব্লকে এ অভিযান চালানো হয়। এসময় গোলাগুলির পর অস্ত্র ও আটক মোহাম্মদ ইলিয়াসকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর ইলিয়াস স্বীকার করেছে মিয়ানমারের যুদ্ধ করে ১৫-১৬ দিন আগেই ক্যাম্পে আসে সে। এসেই আরসা সদস্যদের অস্ত্র সরবরাহ করছে। ইলিয়াস নিজে স্বীকার করে ৪ মাস করে ৪ বার সামরিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সে। আরসার রোহিঙ্গা ক্যাম্প শাখার সামরিক প্রধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত।


আরও পড়ুন: কক্সবাজার পৌরসভার উন্নয়ন কাজে সন্তুষ্টি প্রকাশ জাইকা প্রধানের


এক প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার আরেফিন বলেন, ইলিয়াসকে আটকের ক্ষিপ্ত হয়ে রবিবার ভোরে উখিয়ার মধুরছড়া ৪- এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ-ব্লকে নিরাপত্তায় নিয়োজিত এপিবিএন পুলিশের ৯ সদস্যের উপর হামলা করা হয়েছে। ক্যাম্পের কাঁটাতারের সীমানার বাহির থেকে ৩০ থেকে ৩৫ জন সদস্য প্রবেশ করে অতর্কিত এপিবিএন সদস্যদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ী গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছুড়ে। গোলাগুলির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।  গোলাগুলিতে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে মো. শাহরাজ নামের এপিবিএন পুলিশের এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়। এতে তার ডান উরু ও ডান হাতের আঙ্গুলে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। গুলিবিদ্ধ এপিবিএন সদস্যকে উদ্ধার করে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওখানে চিকিৎসায় আশংকামুক্ত হলেও শাহরাজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


উভয় ঘটনায় মামলা দায়ের এবং ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।


এমএল/