জাবি’র উপাচার্য ও প্রক্টরের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা: ইউএনও সাভার


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৩৮ অপরাহ্ন, ১৮ই জুলাই ২০২৪


জাবি’র উপাচার্য ও প্রক্টরের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা: ইউএনও সাভার
ছবি: প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের গুলি চালানোর পর সাভার উপজেলা ইউএনও রাহুল চন্দ্র আন্দোলনকারীদের সাথে আলাপকালে জানান, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, প্রক্টর জানিয়েছেন যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের উপর হামলা করেছে৷ তারা রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে বন্দি অবস্থায় আছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে ঔষধ, খাবার নিয়ে যেতে দেয়া হচ্ছে না। তাদের উদ্ধার করার জন্য তারা বারবার আমাদের জানাচ্ছিলেন। তাই আমরা তাদের উদ্ধার করতে এসেছি।'


বুধবার (১৭ জুলাই) বিকাল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে সতর্ক করার পর কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছুঁড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ৷


আরও পড়ুন: জাবি শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের টিয়ারশেল-রাবার বুলেট নিক্ষেপ


প্রায় দুই ঘন্টা সংঘর্ষ শেষে সন্ধ্যা পৌনে ৭ টায় পুলিশি প্রহরায় উপাচার্য অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের হয়ে বাসভবনে চলে যান।


বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. শামসুর রহমান জানান, রাত ৮ টা পর্যন্ত অন্তত ৮০ জনের অধিক আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছে। এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর৷ তাদের সাভারের এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।


এর আগে, সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে হল ভ্যাকেন্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়৷ তবে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হলেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সিন্ডিকেট সদস্য, প্রক্টর ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষকদের রেজিস্ট্রার ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২ টা থেকে শহীদ মিনার এলাকায় মুখোমুখি অবস্থান নেয় পুলিশ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা৷


প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোটা আন্দোলনের কারণে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হলো। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসসমূহ যথারীতি খোলা থাকবে। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে ১৭ জুলাই  বিকাল ৪ টার মধ্যে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হলো।


এদিকে হল ভ্যাকেন্টের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। সেই সাথে হল থেকে লাটিসোটাসহ ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে  পড়ে হাজারো শিক্ষার্থী। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় শিক্ষার্থীরা ভিসিসহ অন্যান্য শিক্ষকদের রেজিস্ট্রার ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে।


আরও পড়ুন: জাবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি-টিয়ারশেল


পরে বিকাল ৫ টায় পুলিশের পক্ষ থেকে এএসপি আব্দুল্লাহিল কাফি মাইকে ঘোষণা বলেন, আপনারা সবাই হলে ফিরে যান। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করুক। পরে শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে না দেয়ায় তাদের উপর গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়।


প্রায় দুই ঘন্টা অভিযান শেষে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান ব্রিফিংকালে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমাদেরকে জানানো হয়েছিল উপাচার্য, প্রক্টর, সিন্ডিকেট সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে৷ আমরা তাদের উদ্ধার করে আমাদের অভিযান শেষ করেছি।'


জেবি/এজে