‘একগুচ্ছ ফুল’হয়ে পরীক্ষার হলে শহীদ আহনাফ


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:৪৬ অপরাহ্ন, ১৮ই আগস্ট ২০২৪


‘একগুচ্ছ ফুল’হয়ে পরীক্ষার হলে শহীদ আহনাফ
ছবি: সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ এক মাস বন্ধের পর খুলল দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্ধু-সহপাঠী সবাই ক্লাসে ফিরলেও ফেরেনি বিএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থী শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ। ছাত্র আন্দোলনে গেল ৪ আগস্ট গুলিতে মারা যায়  সে। তার স্মরণে আজ (রবিবার) ক্লাসের টেবিলের আহনাফের আসন ফাঁকা রাখে সহপাঠীরা।


রবিবার (১৮ আগস্ট) সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, আহনাফের সব সহপাঠী ক্লাসে-পরীক্ষার টেবিলে। আহনাফের টেবিলটা শুধু ফাঁকা। তার স্মরণে বন্ধুরা সেখানে ফুল রেখেছে।


আহনাফের সহপাঠীরা জানান, আহনাফের টেবিলটা আজ ফাঁকা। তার স্মরণে টেবিলে ফুল রেখেছে সহপাঠীরা। তারা তাদের শহীদ বন্ধুকে ভুলে নাই, ভুলতে পারবেও না। ফুল হয়েই আহনাফ আজ পরীক্ষায় অংশ নিলো।


তারা আরও জানান, “সত্যি যদি জড় বস্তু টেবিলের প্রাণ থাকত, আহনাফের এই শূন্যতা, এই ফুলের তোড়ার ভার কীভাবে সইত!”


আরও পড়ুন: নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়, আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যাব: শিক্ষা উপদেষ্টা


আহনাফ তার পরিবারের সদস্যদের বলত, বড় হয়ে এমন কিছু করবে, যার জন্য পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে গর্ব করবেন। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে গুলিতে নিহত হয় আহনাফ। তাকে নিয়ে এখন গর্বিত পরিবারের সদস্যরা। তবে আহনাফের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এভাবে তারা গর্বিত হতে চাননি।


আরও পড়ুন: এক মাস পর খুলল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান


জানা যায়, রাজধানীর বিএএফ শাহীন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল আহনাফ। আগামী ২০২৫ সালে তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে শুরু থেকেই আহনাফ সোচ্চার ছিল। আন্দোলনে অংশ নিয়ে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেটে আহত হয়ে সে একবার বাসায় ফিরেছিল। আন্দোলনে যেতে নিষেধ করলে আহনাফ তার মা আর খালাকে বলত, “তোমাদের মতো ভিতু মা-খালাদের জন্য ছেলেমেয়েরা আন্দোলনে যেতে পারছে না। ১৯৭১ সালে তোমাদের মতো মা-খালারা থাকলে দেশ আর স্বাধীন হতো না।”


আহনাফের মা সাফাত সিদ্দিকী ও খালা নাজিয়া আহমেদ জানান, “আন্দোলনে যেতে বাধা দিলেই আহনাফ বলত, সে সাঈদ-মুগ্ধ ভাইদের মতো সাহসী হতে চায়। তাদের মতো কিছু হলে তারা গর্ব করে বলতে পারবেন, ‘আমরা আহনাফের মা-খালা’। শেষ পর্যন্ত আহনাফ হয়েছেও তাই।”


জেবি/এসবি