ইবির উপাচার্য নিয়োগ:

বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের দৌড়ঝাঁপ, আলোচনায় নেই আওয়ামীপন্থীরা


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৪১ অপরাহ্ন, ২০শে আগস্ট ২০২৪


বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের দৌড়ঝাঁপ, আলোচনায় নেই আওয়ামীপন্থীরা
ফাইল ছবি।

সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি: আওয়ামী সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট পদত্যাগ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। বর্তমানে শীর্ষ এই পদটি শূন্য থাকায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।


এদিকে সরকার পতনের পর থেকেই শীর্ষ এই পদটিতে নিয়োগ পেতে তোড়জোড় শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। ইবির ১৪তম উপাচার্য হতে এখন পর্যন্ত ৭ জনেরও বেশি শিক্ষকের নাম আলোচনায় আসছে। তারা প্রত্যেকেই বিএনপিপন্থি শিক্ষক সংগঠনের সদস্য। এছাড়া জামায়াতপন্থি কয়েকজন শিক্ষকও উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেতে গোপনে চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে উপাচার্য হওয়ার আলোচনায় নেই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা।


আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ


আলোচনায় থাকা শিক্ষকরা হলেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমান, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মিজানূর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. নজিবুল হক, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন, লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান এবং আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী।


আলোচিত শিক্ষকদের মধ্যে অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমান বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সকল শিক্ষকের মধ্যে যোগদানের দিক থেকে সবচেয়ে সিনিয়র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট, ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া একাধিকবার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষ ও ভাইস-চেয়ারম্যান ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।


অধ্যাপক মিজানূর রহমান চারবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্বপালন করেছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় জিয়া পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তিনি দক্ষিণ কোরিয়া ও আর্মেনিয়ার দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।


অধ্যাপক এমতাজ হোসেন বর্তমানে কলা অনুষদের ডিন ও জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। এর আগে তিনি একবার শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন।


অধ্যাপক মতিনুর রহমান বর্তমানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে জিয়া পরিষদ ভেঙে গঠিত সাদা দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও ইউট্যাব বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কার্যনির্বাহী সদস্য পদে রয়েছেন। তিনি একবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।


বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অ্যাসোসিয়েশনের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন। তিনি দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় জিয়া পরিষদের সভাপতি ও একবার শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।


এছাড়া অধ্যাপক নজিবুল হক ও অধ্যাপক এয়াকুব আলী একবার করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় জিয়া পরিষদের সভাপতি ছিলেন।


আরও পড়ুন: সরে দাঁড়ালেন জবির সমন্বয়ক নূর নবী


এদিকে দলীয় ও রাজনৈতিক পরিচয় নয় বরং শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও প্রশাসনিক দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষককে উপাচার্য হিসেবে প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের। ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের শিক্ষার্থী আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘উপাচার্য হিসেবে এমন একজন শিক্ষককে চাই যিনি শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষাকে বুঝতে পারবেন এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে নিতে একজন স্কলার শিক্ষককে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হোক।’


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘আগে যেমন দলীয় বিবেচনায় লবিংয়ের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হতো, আমাদের চাওয়া এখন যেন সেভাবে নিয়োগ দেওয়া না হয়। উপাচার্য হোক শিক্ষার্থীদের জন্য, যেন কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী না হয়।’


আরএক্স/