রাজশাহীতে মেস মালিকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮:১৫ অপরাহ্ন, ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০২৪
রাজশাহী নগরীর বিনোদপুর এলাকার মন্ডলের মোড়ে অবস্থিত 'নাজ মহল' মেস মালিক সাইফুলের বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) নগরীর মতিহার থানায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
এবিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্ত সাইফুল কে শিক্ষার্থীরা ধরে থানায় নিয়ে আসে এবং ভুক্তভোগী মেয়েটি একটি মামলা করেছে। এখন তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: জাবিতে প্রশাসনিক পদ শূণ্য থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শিক্ষার্থীরা
এর আগে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী তার উপর নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ গ্রুপে একটা পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করলে রাত ১টার দিকে রাবি'র শিক্ষার্থীরা মেসের সামনে জড়ো হয় এবং অভিযুক্তকে ধরে থানায় নিয়ে যায়।
ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমি আমার মেস মালিকের দ্বারা ফিজিকালি এবং মেন্টালি হ্যারাসমেন্টের স্বীকার হয়েছি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে, কারফিউ জারি করার কয়েকদিন আগে আমি যখন রাতে মেসে ফিরি, তখন মেস মালিক রুমের দরজা নক না করেই ভিতরে ঢুকে যান। তারপর উনি আমার পিঠে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করে যে, আমি কী করছি। আমি তাকে সাথে সাথে রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলি। কিন্তু উনি বের না হয়ে বিভিন্ন রকম আজেবাজে কথা বলা শুরু করে। উনি বলতে থাকেন, 'তুমি একা একা কি করবা? আমি থাকি এখানে একটু? তুমি তো সুন্দর। সাবধানে থাকো, কেউ যদি তোমার সর্বনাশ করে দেয়, তখন কী হবে! তুমিতো আন্দোলনে যাও। আন্দোলনে তো ভদ্র মেয়েরা যায় না। তোমার আন্টিতো নাই। তুমি একা একা আছো, আমার কাছে এসে থাকো' ইত্যাদি।
তিনি আরও লিখেছেন, এসব বলতে বলতে সে আমার গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করতে থাকে। আমি বারবার তার হাত সরিয়ে দেই। তাকে চলে যেতে বলি। আমি যখন চিৎকার করে কথা বলা শুরু করি, তখন উনি চলে যায়। আমি তখন আমার ইউনিটে একা ছিলাম। আমার পাশের ইউনিটে একজন মেয়ে ছিলো। সে বাথরুমে থাকায় তেমন কিছু শুনতে পায়নি। তারপর থেকে আমার বাড়ি চলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত সে বিভিন্ন আজেবাজে কথা বলে। ওনার বাসায় যাওয়ার কথাও বলে।
আরও পড়ুন: নোবিপ্রবিতে পিএইচডি প্রোগ্রামের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু
আমি তখন থেকে আমার পাশের ইউনিটের মেয়েটার সাথে থাকা শুরু করি ৷ তারপরও সে প্রায় প্রতিদিন আমাদের দরজায় নক করতো। এক পর্যায়ে আমি অতিষ্ট হয়ে আমার আত্মীয়ের বাসায় চলে যাই। এই ঘটনা আমার মানসিক অবস্থা পুরো নষ্ট করে ফেলেছে। আমি এখনো পুরোপুরি নরমাল হতে পারিনি। এখন আমার কী করা উচিৎ, আমি বুঝতে পারছি না। আমি জানি আমি অনেক লেট করে ফেলেছি। কিন্তু আমি আসলে এই ব্যাপারে আলোচনা করার মতো মানসিক অবস্থায় ছিলাম না।
এবিষয়ে মোজাহিদ হোসেন নামে আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ২৪ এর বিপ্লবী চেতনা আমাদেরকে নতুন বাংলাদেশ দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা বিশ্বাস করি, দেশে আইনের পূর্ণ শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সকল ধরনের অন্যায় অবিচার দূর হবে। বাংলাদেশের প্রতিটি ক্যাম্পাস, শহর ও গ্রাম হবে নিরাপদ আশ্রয়স্থল, যেখানে কোনো নারী বা, মেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না।
এমএল/