নেত্রকোণায় বন্যার পানি কমছে, বাড়ছে দুর্ভোগ-দুশ্চিন্তা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:৪৮ অপরাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৪


নেত্রকোণায় বন্যার পানি কমছে, বাড়ছে দুর্ভোগ-দুশ্চিন্তা
ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোণায় বন্যার পানি কমতে শুরু করছে। তবে সংকট এখনো কাটেনি। বন্যা–পরবর্তী সময়ে ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে অনেক বাসিন্দার। ধান-চাল পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে খাবারের জন্য এসব মানুষকে পড়তে হচ্ছে কষ্টের মধ্যে।


জেলার বেশির ভাগ গ্রামীণ রাস্তাঘাট এখনো পর্যন্ত পানির নিচে থাকায় কাজের সন্ধানে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। পানির নিচে আছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর আমন ফসল। ২৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো বন্ধ আছে। পানিবন্দি আছে প্রায় লক্ষাধিক পরিবার।


আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে বন‍্যা দুর্গতদের মাঝে বিএনপি নেতা ওয়াহাবের ত্রাণ বিতরণ


নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুর থেকে কংস, সোমেশ্বরী, ধনু, উব্দাখালীসহ সব নদ-নদীর পানি দ্রুত কমছে। তবে এখনো উব্দাখালী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৬ দশমিক ৫৫ মিটার। অন্য নদ-নদীগুলোয় পানি বিপৎসীমার নিচে আছে। আশা করা যাচ্ছে, এসব নদ-নদীর পানি ধনু হয়ে মেঘনায় দ্রুত নেমে যাবে।


স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এজিইডি) নেত্রকোনা কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, জেলায় এলজিইডির আওতাধীন ৫ হাজার ৯৫৩ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১ হাজার ৬৩৮ কিলোমিটার পিচ ঢালা সড়ক। বাকিগুলো সিসি, আরসিসি, মেগাটম, কার্পেটিং ও কাঁচা সড়ক। পানিতে তলিয়ে যাওয়া যেসব সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে, অধিকাংশ সড়ক ব্যবহার করা যাচ্ছে না। স্রোতে স্থানে স্থানে ভেঙে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় পাকা সেতু, বক্স কালভার্টসহ সংযোগ সড়ক বন্যায় ধসে গেছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে।


আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, শেরপুরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানিয়েছেন, জেলার ১০টি উপজেলায় এক লাখ ৩৫ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। তিনি বলেন, আকস্মিক বন্যায় ২৪ হাজার ৬৬৭ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ১৭৭ হেক্টর জমির সবজি নষ্ট হয়েছে।


জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহজাহান কবীর বলেন, বন্যায় এক হাজার ৪৮০টি পুকুর ও খামারের ৭২৩ দশমিক ৪৩ টন মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। আট কোটি ২৪ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।


নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমকে জানান, এ পর্যন্ত চার লাখ টাকা, তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৮০ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী এই বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে।


এমএল/