আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে নাগরিক কমিটি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৯ অপরাহ্ন, ৩রা ডিসেম্বর ২০২৪
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হিন্দুত্ববাদীদের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
আরও পড়ুন: ইসির সঙ্গে সংস্কার কমিশনের বৈঠক বুধবার
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় শাহবাগ জাতীয় যাদুঘরের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটওয়ারি বলেন, “আমরা সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সহযোগিতার যে দক্ষিণ এশিয়ার স্বপ্ন দেখি, দিল্লীর বর্তমান এস্ট্যাবলিশমেন্ট আমাদের সেই স্বপ্নে বারবার আঘাত করছে। বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা ভিয়েনা চুক্তির লঙ্ঘন এবং আমাদের সার্বভৌমত্বে স্পষ্ট আঘাত। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানাই- দেখুন উগ্র হিন্দুত্ববাদের নগ্ন চেহারা! দেখুন, দিল্লীর আগ্রাসনবাদ কীভাবে প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোর ঘাড়ে শ্বাস ফেলছে। যারা যারা এই আগ্রাসনের শিকার হচ্ছেন, তাদেরকে মুক্তির প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই আমরা। এই আগ্রাসন বিরোধী ঐক্যে নেতৃত্ব দিতে ঢাকা প্রস্তুত আছে, ঢাকা ইজ রাইজিং!”
এছাড়াও, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাই মাসে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যারা লড়াই করেছেন এমন সকল রাজনৈতিক দল, মত ও পথকে বাংলাদেশ এবং সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সদস্য সচিবের বক্তব্যে আখতার হোসেন বলেন, “বাংলাদেশ থেকে গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গেছে, বাংলাদেশের মানুষ সুখে আছে- এটা দিল্লীর সহ্য হচ্ছে না। আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা বলতো- বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই- আমাদের সাথে ভারতের সম্পর্ক অধীনত্ব কিংবা দাসত্বের সম্পর্ক নয়। নতুন বাংলাদেশে ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক নিশ্চিত হবে ন্যায্যতা ও আমাদের স্বার্থের ভিত্তিতে। দিল্লীর বাঁধের কারণে আমাদের নদীগুলো মরে গেছে, আবাদি জমি শুকিয়ে গেছে। যেসব অসম ও পরিবেশ বিরোধি চুক্তির কারণে দিল্লী আমাদের জনগণ ও পরিবেশের উপর এই আগ্রাসন চালিয়েছে, সেসব অসম ও পরিবেশ বিরোধি চুক্তি অচিরেই বাতিল ঘোষণা করতে হবে।
৫ই আগস্টের পর থেকেই ভারতের মিডিয়াগুলো বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে আসছে। কিন্তু দিল্লীর সরকার এই প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় নি। এ কারণেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে।”
আরও পড়ুন: ছাত্রনেতা-রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
তিনি আরো বলেন, “চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করার পরেও বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক সংযম ও সম্প্রীতির পরিচয় দিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জনগণ দিল্লীর ষড়যন্ত্রকে অত্যন্ত দক্ষতা ও কৌশলের সাথে মোকাবেলা করেছে। ভবিষ্যতেও দিল্লীর পাতা ফাঁদে পা না দিয়ে সার্বভৌমত্বর প্রশ্নে দল-মত নির্বিশেষে সকল জনগণ একতাবদ্ধ থাকবে বলে আশা করি আমরা।”
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা একটি প্রতিবাদী মিছিল বের করেন। মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
এসডি/