রাজধানীতে সম্প্রীতি সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তাব ধর্মীয় নেতাদের


Janobani

বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:৪৮ অপরাহ্ন, ৫ই ডিসেম্বর ২০২৪


রাজধানীতে সম্প্রীতি সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তাব ধর্মীয় নেতাদের
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে ঢাকায় একটি শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন ধর্মীয় নেতারা।


বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে আমন্ত্রিত ধর্মীয় নেতারা এ প্রস্তাব দেন।


বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমির গেটে ধর্মীয় নেতারা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।


আরও পড়ুন: রেলের জমি থেকে স্থাপনা সরাতে ৫ দিন সময় দিল সরকার


প্রধান উপদেষ্টা মন দিয়ে সবার কথা শুনেছেন জানিয়ে বাংলাদেশ বৌদ্ধস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় বলেন, দেশে যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে। আমরা যেন মিলেমিশে থাকতে পারি। এটা আমাদের ঐতিহ্য। সে বিষয়ে যেন প্রধান উপদেষ্টা ব্যবস্থা নেন।


রমনা হরিচাঁদ মন্দিরের সহ-সম্পাদক অবিনাশ মিত্র বলেন, আমরা যারা বাংলাদেশে আছি, আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। কিন্তু বিভেদটা কোথায়? যারা বিভেদ তৈরি করছে তারা আমাদের মধ্যে ঢুকে বিদেশে বসে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। তারা স্বার্থ হাসিল করবে এটা আমরা চাই না। এটা বাংলাদেশ। এখানে আমরা সবাই সমানভাবে মিলেমিশে আছি। কোনো সমস্যা নাই। যারা আমাদের আইনজীবী ভাইকে হত্যা করেছে সেকি হিন্দু, মুসলিম নাকি দুষ্ট লোক তা নিশ্চিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।


রমনা সেন্ট ম্যারিজ ক্যাথেড্রালের প্রধান পুরোহিত অলভার্ট রোজারিও বলেন, গতকাল রাজনৈতিক দলগুলো যে কথা বলেছে তার সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করেছি। আমরা একটা স্পর্শকাতর সময় পার করছি। এই সময়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।


আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডের রাজধানীতে হচ্ছে বাংলাদেশের হাইকমিশন


তিনি বলেন, ইসকনের ঘটনায় মানুষের মনে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা কষ্টে আছেন, যাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তাদের অনেকেই আজ আসেন নাই। তাদেরকে নিয়ে যেন প্রধান উপদেষ্টা বসেন আমি এই কথা বলে এসেছি।


আলভার্ট রোজারিও বলেন, আমাদের ইসকনের যে ভাই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন, আইনে যদি কোনো পথ খোলা থাকে তার জামিনের বিষয়টা বিবেচনা করা হয়।


গারো পুরোহিত জনসন মুরি কামাল বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেসব মিডিয়া অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের আমরা প্রতিরোধ করবো। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। এই সরকারকে আমরা সহযোগিতা করবো।


আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ডাকে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন ধর্মের নেতৃবৃন্দ এখানে এসেছেন। বাংলাদেশের মানুষ কেমন আছে- বিশেষ করে আমাদের অন্য ধর্মাবলম্বী যারা আছেন মুসলিম ছাড়া তারা কেমন আছেন তাদের অবস্থা ব্যক্ত করেছেন।


আরও পড়ুন: হাসিনার সেই ‘৪০০ কোটির পিয়নের দেখা মিলল নিউইয়র্কে


আমরা লক্ষ্য করেছি এখানে সবাই চমৎকার ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় আছে। সেটা কিভাবে ধরে রাখা যায় সেজন্য সবাই মন খুলে কথা বলেছি। প্রধান উপদেষ্টা মনোযোগ দিয়ে আমাদের কথাগুলো শুনেছেন।


দেশের শীর্ষস্থানীয় এই আলেম বলেন, আমরা যখন দেখি সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, সেই জায়গায় আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত। আমাদের দেশের সংখ্যালঘু ভাইয়েরা নিরাপদে আছেন এবং আরও নিরাপদ থাকবেন। তাদের নিরাপদ রাখার জন্য সরকার যেমন কাজ করছে। ধর্মীয় নেতারাও কাজ করছে। আমরা মূলত এই বার্তাটি প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি ঐক্যবদ্ধ থাকবো।


এমএল/